কালকে একটা স্বপ্ন দেখেছি আমি।
দেখেছি শুভ্র প্রাসাদ-শিখর দামি...
কোষ্ঠী পাথরস্তম্ভে সময় খোদিত,
বহুমূল্য কালের স্ফটিক শোভিত,
প্রহরীর মত দরজা গুলো দাঁড়িয়ে...
কালের স্রোতে জৌলুস শুধু হারিয়ে।
তাকিয়ে সমুখে সুধায় যে আসে তাকে...
"এক পা পিছিয়ে খুঁজতে এসেছ কাকে"?
উত্তর খুঁজে পায়নি সে কোনদিনই...
প্রশ্নগুলো উড়ে গেছে আলগোছে,
শ্রান্ত সন্ধ্যেয় হাওয়ারাও অভিমানী,
চিলের ডানাতে তবুও সুখটি খোঁজে।
তেমনি উদাসী দুস্থ সন্ধ্যেবেলায়
দাঁড়ালাম তার উঠোন জুড়ে আমি,
ধূসর হাওয়ার অস্ফুট কানাঘুষায়
শুনতে পাই নি তার বলা কথাখানি।
আমার তখন কুড়িয়ে নেওয়ার নেশা...
ভাঙ্গাচোরা ঘড়, ইটের দালানকোঠা,
আর ফেলে আসা ছন্দে গন্ধে মেশা
ছড়ানো ছেটানো কঠোর বাস্তবতা।
এরই ফাঁকে ঐ পুকুর পাড়ের থেকে
হাওয়া বয়ে আনে প্রশ্ন প্রতিধ্বনি,
মনেতে কি এক উঠল হঠাৎ মেতে,
যেন মালকোষ বাজে, সঙ্গতে খঞ্জনি।
কারোর খোঁজে নয়তো আসা হেথায়
তবুও যেন কিছু খুঁজে পেতে,
সিংদুয়ারের সিংহ বসা মাথায়
নিজের মনেই দৃষ্টি গেলো এঁটে...
চোখের সামনে চলল চাকা ঘুরে...
দেখতে পেলাম মনের অন্তঃপুরে
আমিই যেন সিংহাসনে চড়ে,
সবকিছুরই বিধান দিচ্ছি করে।
আস্তে করে এবার প্রাসাদখানি
একটি ঝলক তাকাল মোর পানে,
চোখের থেকে নামিয়ে নজরখানি
জয়গান সে গাইল আমার কানে।
আজকে আমি রিক্ত-সিক্ত পথিক,
পারব না তো চাইলে আগের মত
যা করেছি তখন নিয়ম মাফিক,
হাত বাড়িয়ে দেওয়ার প্রথা যত।
লজ্জা আমার চোখের তারায় ভরা,
মহল ভাবে রাজার দণ্ডে খরা,
শোনায় শুধু দুঃখ বেদন তাজা,
আগন্তুকের বেশে মলিন রাজা।
দীর্ঘশ্বাস নিজের বুকে ভরে
ভাবি ফিরে যাওয়াই এবার ভালো,
হঠাৎ দূরে বাজলো ঘণ্টা জোরে,
জ্বলল কোথাও ভেতরে এক আলো।
পড়লো মনে সন্ধে হলে আগে
বাজত পূজোর ঘরে ঢাকের আওয়াজ,
এবার হয়তো নিজের মানুষ দেখে,
অতীত শানায় পুরানো সেই রেওয়াজ।
সেই বাজনার শেষ ধ্বনিটা ধরে
স্বপ্ন থেকে বেড়িয়ে আসার মোড়ে,
আবার তাকাই প্রাসাদখানির দিকে...
রাজার গল্প লাগছে বড়ই ফিকে।