কচুরিপানা তুই বাউলিয়ানা,  তোর ঠিকানা নাই,
বাউ বাতাসে যেখানে নেয়, সেখানেই তোকে পাই।
নদীর স্রোত ভাসিয়ে  নেয়, কোথায় তুই  যাস?
তিন মোহনার জলের স্রোতে, চুবান তুই খাস।
জলের পাকে ডুবে  মরিস, দূরে  গিয়ে ভাসিস,
দক্ষিণ  হাওয়ার ধাক্কা খেয়ে, আবার  ফিরে আসিস।

তুই যেন এক অসুরছানা, তোর কি লজ্জা নাই?
ঝাঁকড়া চুলে পানি খাস, তাইতো দেখতে  পাই।
তোর  কারণে মশা মাছি,  অধিক  বাচ্চা তুলে,
মশার হার  আরো বাড়ে, ঘোর অন্ধকার  হলে।
স্বচ্ছ পানি নষ্ট করিস, সৃষ্টি  করিস ময়লা,
তোর কারণেই  ময়লা পানি, বাড়ায় সবার জ্বালা।
কোন কাজে  লাগিস তুই, তোর কিসের  মূল্য?
কি নিয়ে  গর্ব তোর ?  কিসের তুই  তূল্য?

কচুরিপানা  বলে- ভাই, এত রাগছো কেনো?
আমিও  কিছু কাজে লাগি, তাতো তুমি জানো।
তোমার  কথা সত্য কিন্তু,  আরো সত্য  আছে,
তৃপ্তির  সাথে আমায় খেয়ে, তোমার  গরু  বাঁচে।

দুপুর  রোদে মাছের  পোনা, গরম  জলে ভাসে,
মাছের  পোনা জীবন বাঁচায়,  আমার  নিচে  এসে।
অনিন্দ্য  সুন্দর  কচুরি ফুল, কবির  দৃষ্টি কাড়ে,
ফুল  দেখে সব আগন্তুক,  মনের  ক্লান্তি  ঝাড়ে।

টেনে তুলে শুকনা করে, আলুর ক্ষেত ঢাকো,
রোদ লাগিয়ে  আগুনে পুড়ে, ছাই করে রাখো।
আমাকে বানাও জৈব সার, ফসলের  মাঠে ছিটাও,
সার বানিয়ে  ব্যবহার করেও, আমার  বদনাম রটাও।

পানির উপর আটকে রেখে, মাছের  ঘের কর,
আমার  নিচে আশ্রয়  নেয়া, সকল  মাছ ধর।
মজা করে খাও মাছ, যেমন তুমি  চাও,
বদনামি ছেড়ে তোমার জন্যই, আমার যত্ন নাও।