মধুমতীর গতিবিধি মধুময় নয়,
বছর ধরে শান্ত থাকে বর্ষাকালে ভয়।
দিনদিন ভরাট হয়ে গভীরতা কম,
বর্ষাকালে স্রোতের জলে স্রোতস্বিনী যম।
তীর বাসী নদীর জলে মাঝেমধ্যে নামে,
গভীরতা বেশি দেখলে মাঝপথে থামে।


বন্ধু থাকে নদীর তীরে তীর ঘেঁষা ঘরে,
সারা বছর জলহীন বর্ষায় এসে ভরে।
ভরা নদীর তীর ঘেঁষে পেতে রাখে জাল,
বর্ষা ছাড়া সারাবছর মাছের আকাল।
মাঝেমধ্যে অল্পবিস্তর ছোট মাছ ধরে,
শ্রম দিয়ে মন বসে না ফিরে যায় ঘরে।


ভরা বর্ষায় তীর ঘেঁষে পালের নৌকা যায়,
নায়ে বসেই মাঝিমাল্লা ভাটিয়ালি গায়।
মধুমতীর স্রোতের জলে প্রাণ ফিরে আসে,
নদীর চরে ঘুঘু নাচে চৈত্র বৈশাখ মাসে।
স্রোতের জলে বালি এসে চরে ঢাকা পড়ে,
ফাগুন মাসে চরে দেখি গাছগাছালি ভরে।


শীতকালে নদীর জলে সাদা বক হাটে,
পুঁটি টোনা খুঁজে বেড়ায় ধরে তার ঠোঁটে।
চরে এসে শামুক ঝিনুক মরা পড়ে থাকে,
রাত হলে শেয়াল এসে ব্যাতিব্যস্ত রাখে।
শেয়াল ডাকে হুক্কাহুয়া ঘুমটা করে হারাম,
নদীর তীরে ঘুমের জন্য বর্ষাকালে আরাম।


যৌবন ফিরে মধুমতীর ভরা বর্ষা এলে,
ভালো লাগে বন্ধুর বাড়ি বর্ষাকালে গেলে।
নদীর তখন প্রাণ থাকে জলে খেলে ঢেউ,
তীরে বসে পূবাল হাওয়া খায় কেউ কেউ।
ভরা নদীর জোয়ার দেখে বাড়ে মনে গতি,
বন্ধুর কাছে কালের সাক্ষী নদী মধুমতী।