প্রথম চিঠিটা ছিল ৩১ ডিসেম্বর
প্রেম নয়, বদ্ধুত্তের আবেদন।
দরজা ফাঁক দিয়ে নীল খামে ঢুকিয়ে দিয়ছিলে
কয়েকটি চকলেট ও একটি নীল কলম সাথে,
আরও ছিল একটা অদ্ভুত রজনিগন্ধা।
সেদিন হোস্টেলে মাত্র আমরা ক'জন।
আমার প্রতি তোমার শুভাকাঙ্ক্ষা
জনশূন্য বালির উপর যে নদীর বয়ে বেড়ানো,
বদ্ধুত্তের এই লোভনীয় প্রস্তাব সে কি ফিরিয়ে দিতে পারে?
আমি নিঃস্ব ছিলাম বলে তোমার স্পর্শ
প্রত্যেক গ্রামে, শহরে, নগরে, নোঙ্গর ফেলে কোন বন্দরে
আমার চিন্তার পিছনে সমস্ত অরণ্য,
আবছা অন্ধকার থেকে তোমার আলোয়
বাতাসে বাতাসে আমি সর্বস্বান্ত, কিন্তু উদ্দাম
একটি আঠারোতে পা দেওয়া পাগলের আনমনা জুতোহীন হাঁটা
কি বৈশাখ, কি চৈত্র, কার্তিকের উন্মাদনা
আকাশের মেঘ বৃদ্ধিতে গভীর বৃষ্টি
একটি হিংস্র সকাল থেকে প্রবল বাতাস অশ্রু
মাতাল নদিতে শান্ত মাথার দোল
ঝাউবনের ঝনঝন নিঃশ্বাসে সুরমা কাল মেঘ আবার বৃষ্টি দেয়।
সারারাত ধরে মেঘ-বর্ণবিশিষ্ট ঘুম তলদেশের কালো স্বপ্ন
সমস্ত রাত্রি আমার যেন বিষাক্ত সর্পদংশন
সাত সমুদ্রপথ যাইহোক, পাড়ি দেবার আখাঙ্কায়
তোমার বদ্ধুত্ত কয়েক দিনের জন্য উর্বর আশ্রয়।
দিন মারা যায়. কালচে ধূলিমলিন মাটির রাতে
আমার চোখ স্থির ছিল, তোমার মিষ্টিস্বাদের পদচিহ্নের
আমি পিছনে পিছনে হাঁটি
তোমার উষ্ণ দুটি হাত আমাকে টেনে নিয়ে চলে
বহুদূর, অজানা কোন গন্তব্যে।
সেদিন থেকে আমাদের ভালবাসার প্রতিশ্রুতি,
ঐশ্বরিক একটি শাখার উপর
বরাবর সকালের সূর্য সঙ্গে রাতের চাঁদ
তোমার কপালে জমে থাকা শিশিরবিন্দু
আলতো করে স্পর্শ করার অপেক্ষা
তোমার পায়ের তলায় কি স্রোতহীন কোন নদী?
সকালে তোমার অন্তরের উপর ছিটিয়ে কিছু আর্দ্র শব্দ,
বিকালের বদ্ধুত্ত সদ্ধ্যায় ভালোবাসায় রূপ নেয়।
সদ্ধ্যার ভালোবাসার ঠিকানা হয় গভীর রাতের প্রেমে
পরদিন সকাল হয় আমাদের অজানা অচেনা গন্তব্যহীন পাড়ি।