আমরা শান্তি চাই,
তোমরা তোমাদের কাঁধ থেকে রাইফেল নামিয়ে নাও।
আজ যুদ্ধবিরতির জন্য শিশুদের আকুতি তোমাদের দরবারে পৌছায় না,
তাদের পুতুল খেলার কাপড় - চোপড় দিয়ে তৈরি করতে হয় যুদ্ধবিরতি পতাকা।
শহীদের সমাধিতে আজ শিশুদেরও নাম পাওয়া যায়।
রাস্তায়, ডাস্টবিনে, নদী নালা নর্দমায় শিশুর গলিত লাশের গন্ধে
তোমার নিঃশ্বাস নাও, হাত জোর করি,
আর কত লাশ চাও?
তোমরা তোমাদের কাঁধ থেকে রাইফেল নামিয়ে নাও।


যখন মৃত্যুর জমি থেকে শহীদের সমাধি মুছে ফেলা হয়েছে,
হায়েনেরা শান্তি সন্ধ্যায় পদব্রজে ভ্রমণ করতে বের হয়,
যখন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে কোন সুগন্ধি ছড়ায়না,
শশানে পোড়ানোর ধূপের গন্ধ,
শান্তির শৈশব কৈশোর যৌবনের জাগ্রত স্বপ্ন ধুলিসাৎ হয়
বৃদ্ধ দুঃস্বপ্নের অপব্যবহারে।
শান্তির পৃথিবীর
পিরামিডগুলোর মাঝে যে অশান্তি, শোষণ, জুলুম, অত্যাচারের,
রহস্যময় ইতিহাস বন্ধি হয়ে আছে,
দূষিত আত্মার নীল স্রোত স্পন্দন মাঝে মাঝে জেগে উঠে।
এখনো অন্ধকারে যারা শান্তি খুঁজে বেড়ায়
শান্তির সম্ভ্রম তারা কি বুঝে?
কে জানে, বিশ্বের একমাত্র বিস্ময়কর শব্দ হল শান্তি।
দুঃস্বপ্নের বাহ্যিক নিরাময় আছে,
দুর্নিবার আবেগপ্রবণতা তা স্পর্শ করতে পারে না।
বাইরে যেমন অসঙ্গতি বিশৃঙ্খলা, মনেও তাই।
আমাদের শান্তিকে তন্ন তন্ন করে খুঁজে বেড়ায় শয়তানেরা,
আমাদের স্বপ্নকে গুলি করে ঝাঁঝরা করে দেয়।


আমরা শান্তি চাই,
তোমরা তোমাদের কাঁধ থেকে রাইফেল নামিয়ে নাও।
তোমাদের স্বেচ্ছাচারীতা মৌলবাদের ঘাঁটিকে উর্বর করে,
তোমাদের হেয়ালিপনা মৌলবাদের শিকড় শক্ত করে,
তোমাদের মিথ্যাচারে মৌলবাদের অশান্তির আগুনে জ্বলে উঠে আমাদের সোনার দেশ,
তোমাদের হঠকারিতায় জীবন দেয় আমাদের শিশুরা,
তোমাদের দূষিত সারে, জলবায়ুতে গর্জে উঠছে মৌলবাদ,
তোমাদের ক্ষমতা বিলাসে মৌলবাদ পাচ্ছে প্রশ্রয়,
বকধার্মিক ভক্তি দিয়ে স্বাধীনতাকে বাঁচানো যায়না।


আমরা শান্তি চাই,
আমি জানি, এই কথা বললে বুকে গুলি এসে বিঁধে,
এটি বিস্ময়কর নয়, এটি সত্য, এতে আশ্চর্য হবার কিছু নাই,
আমার কিছু করার নেই,
আমি জানি, আমি লাশ হব,
আমি তবুও বলব, আমি কখনো থামব না,
হে আমার প্রিয় স্বদেশ, বাঁচাও আমার স্বপ্ন, বাঁচাও আমার ভবিষ্যৎ,
বাঁচাও, আমাদের বাঁচাও।
তোমরা তোমাদের কাঁধ থেকে রাইফেল নামিয়ে নাও।