"তৃতীয় খন্ড"


একে একে শব নেমে আসে তল
উজানের ধারা বহি,
বসুধা তাহার প্রহারে করাল
প্রলয় বারতা লহি।


একদা উছল ছিল যেই প্রাণ
নিথর নীরব আজি
লোলুপ তাহার ছায়াতে করাল
ধরণীর মোহ ত্যাজি।


বসুধা তাহার উদারতা তার
হেন রূপ উপহার,
পরিধি তাহার করিয়াছে পার
মানবের ব্যবহার।


শ্যামল বনানী শ্বাস বায়ু তার
ধ্বংস করিয়া বন
ইটের খোলসে বাঁধিয়া সে ধন
ইমারতে তার মন।  


কারখানা আর যন্ত্র শকটে
বাতাস করেছে ভারি
বসুমাতা তার করালতা তার
প্রহার আজিকে তারি।


বসুধা যেথায় গররাজি হায়
অসহায় নর নারী
নিমেষ মেলিতে পাতালে হারায়
বেসাতির ঘর বাড়ি।


(যারা পূর্বের খন্ডগুলি পাঠ করেন নাই ইচ্ছে হলে দেখে নিতে পারেন)


"প্রথম খন্ড"


বসুধা যেথায় গররাজি হায়
অসহায় নর নারী
নিমেষ মেলিতে পাতালে হারায়
বেসাতির ঘর বাড়ি।


নদী জল তায় রুধিত কারায়
রোধিতে কি পারে নর!!
জলধি ব্যাকুল বাহিত সে কূল
আজিকে অঝোরে খরো।


খরো তার বেগ গর্জন তার
ক্রোধেতে ফুঁষিছে আজি
গতি পথে তার শত কত দ্বার
বেহিসাবী গৃহ রাজি।


নির্বোধ নরে গৃহ তারি গড়ে
শৈল শিখরে তার,
বাদলে যথায় রারি তারি ধারা
খাত তারি বহতার।


পরিণামে তার মূঢ়তা তাহার
প্রহারে আজিকে বারি
কত শত মৃত কতনা নিখোজ
গৃহহীন শত নরনারী।


"দ্বিতীয় খন্ড"


ব্যথায় ব্যথায় আজি প্রাণ ধায়
ধরণীর নাই মোহ,
প্রীতি তারি গতি মানবের প্রতি
চিত্তে রণিত দ্রোহ।।


কেন ভগবান অকালে প্রয়াণ
শত কত নর নারী,
ন্যায়ের কি নাই ন্যায্য বিধান
তোমার এ রাজের প'ড়ি!!


দয়াময় তুমি দয়াল আজি
আজি কেন হ'লে লীন
মেদিনীর বুকে কোন সে কু-রূপ
আজিকে চেতনা হীন!!


হাহাকারে নরে শিশু কচি মাতা
কি তার আছিলো দোষ!!
দেখো নাই তুমি বিধানে তোমার
কি আছে সন্তোষ!!


সন্তাপে ধরা তোমার ওই গড়া
দন্ড বিধান যাহা,
কিছু নাই সার মর্ম কি তার!!
সব ওই মরম হারা!!


(সিকিমে সাম্প্রতিক বন্যা ভূমিধ্বসের পরিপ্রেক্ষিতে লেখা)