"ঈশ্বরের মতি গতি"


(সারমর্ম; এই পৃথিবীতে দুঃখের সীমা নাই, মায়ের কোল থেকে শিশু সন্তান কখনো কেড়ে নেয় কাল আবার কোথাও বা স্বামীহারা স্ত্রীর করুণ নির্মম পরিণতি আবার কোথাও বৈষম্য ভরা করুণ জীবন। দুর্বৃত্তের উদ্দাম কলরোল বা ধনী লোকের চাপাকলে নিষ্পেষিত দরিদ্র জনগণ। হেসে খেলে অবলীলায় তারা জীবন পার করে দেয় অথচ হত দরিদ্র সর্বহারা মানুষজন হাজার মাথা ঠুকাইলেও ঈশ্বর ধরা দেন না বা করুণা বর্ষণ করেন না। লেখাটিতে ঈশ্বরের মহিমা গাওয়া হয়েছে। তিনি তো পরম পিতা তিনিই সৃষ্টি করেন সংহার ও করেন তিনি। নিমেষে রাজাকে ফকির বানাতে পারেন ভিক্ষুক কে মহারাজ। ইহকাল পরকাল, ভূত ভবিষ্যৎ সবই তিনি নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন। এ বিশ্ব ব্রমান্ডের সমস্ত কিছুর তিনি বিচারক। কবিতাটিতে বলা হয়েছে যে যেমনই বিচার হোক না কেন তার বিচার সবসময় নির্মল হয়ে থাকে। সামান্য জ্ঞান নিয়ে হয়তো বা তার বিচার আমরা কখনই বুঝতে পারি না)


ঈশ্বরের মতি গতি! মানুষের বোধগম্যের বাহিরে
কি চান কি চান না! কখনো হীরক মতির বাহার;
কখনো বা কান্না।
ঈশ্বরের মতি গতি! মানুষের বোধগম্যের বাহিরে;
কি চান কি চান না!


বধিতে রুধিরে সিক্ত অনলে সিদ্ধ হস্ত তার
বধ্য ভূমিতে রণ সে সাধিতে রচয়িতে হাহাকার।  
প্রহরে প্রহরে প্রহারে তাহারে রাজন্য ও নৃপতিরে
ভূপাতিত করি রাজ সে হরিয়া ফেলাইতে
দূরে ছুড়ে।  
প্রাণেরো তরণী গাহিতে ধরণী কখনো বা রজসীজ
লোহিত সাগরে ধাবিত হিয়াতে, রোপিতে
প্রাণের বীজ।


বিষাক্ত নাদ তার ই ফরিয়াদ; কেড়ে নিতে কোল তার
অপত্য হীন করিবারে মায়ে; পরিহাস করি মমতার।
কঠিন কঠোর বিধানে তাহার ই ভর্তা হারায়ে জায়া
লেহনে দহনে জ্বলে পুড়ে খাক, নাহি প্রেম নাহি দয়া।
দয়ারই সাগরে দয়াল করাল; বিধানে তাহার ই শত
কি দোষ বিধানে বিধাতা বিমুখ; জানি নাই
তার ব্রত।


শতেক কামিনী গোপিনী ধরায় কলুষিত করে হিয়া
সেথায় নাহিকো দৃষ্টি তাহার ই আলোকিত হয় দিয়া।
পাপাচারী সবে উদ্যত রবে শোষণ ও পেষণে রত
ক্রন্দনে হায় অসহায় জন অন্যায় সয়ে কত।
পাপের মহলে পাপাচারী সনে জাগ্রত তিনি রন
অসহায় জন সাধনে তাহারই তাহাতে
নাহিকো ধ্যান।


সৃষ্টি তাহার ই কৃষ্টি তাহার ই অমল বিধান তার
তাহার ই দয়াতে বহিছে ধরণী শত জিত শত হার।
বিধান তাহারই বুঝিবার নহে তিনি তো পরম পিতা
সৃষ্টি তিনি সংহার তিনি বিধান তিনি
রচয়িতা।


(ভর্তা> স্বামী)