উপমা


আকাশেতে যারা ফেনাইছে বিষ কবন্ধ প্রেত যোনি,
বিষাক্ত শ্বাস রিক্ত মেদিনী,
অস্ফুট বেদনার ধ্বনি।
আলয়ে নিলয়ে যারা কেড়ে নিতে ধন
মানবতা ইন্ধন; কভু কি ধরা তাহাদের করিয়াছে ক্ষমা,
কভু কি সাধিতে পণ!
সংহারিতে খল জ্বেলেছে অনল সহস্র বহ্নির শিখা
আননেতে তার ক্রোধ যোনি হার
ভালেতে করাল রেখা।
বিদ্যুৎ ধারা আঁখিতারা ক্রোধে উন্মাদ দ্রুম
ত্রিশুলেতে ধরা সৃষ্টি স্তিতি লয়
প্রলয়ের ক্ষণ।
হানিতেছে বাঢ় যুগে যুগে তার উত্থানে ধরা,
সুজলাং সুফলাং মহান সে ভূম
দ্বেশ দ্রোহ খল হরা।
আজিকে শমন তাহাদের দ্বারে শুনিতে কি পাস খল,
শৃঙ্খল আজি টুটিছে বক্ষ রক্ষ করিতে কোতল।
নিধন যজ্ঞে প্রজাপতি আজি, নাহিরে নাহিরে ক্ষমা,
সে যে বড় অভিমানী, সে যে বড় অভিমানী,
নাহিকো তাহার উপমা।


অদ্বয়
(রচনাকালঃ ২৫/০৩/১৯৯১)


জানি সে আবার আসবে
জানি সে আমায় ভালোবাসবে।
জানি মনেতে তার তুফান ঘূর্ণিঝর,
প্রলয়মত্ত চিন্তার ঢেউ, গড়াজে উঠিছে
শুনিছো কি কেউ, তাহারি দীপক রাগিনী-
সঞ্চারিছে মোর মর্মের মাঝখানে।


জানি সে আবার আসবে
জানি সে আমায় ভালোবাসবে।
জানি ব্যথিত হৃদয় তার হয়েছে আন্দোলিত,
পল্লব ঘন তরুশাখাসম যুবতী,
হৃদয় হরণ করিয়াছে মম;
তাহারি সুরের পরশে
বন্দী হয়েছে হৃদয় মোর।


জানি সে আবার আসবে
জানি সে আমায় ভালোবাসবে।
জানি তাহারি নূপুরের রিনিঝিনি ধ্বনি
তাহার সুরের মধুর লহরী,
বিজন কাননে হরিনী একাকিনী-
জানি সে কাছে আসবে।
জানি পাতাবাহারের ডালে ডালে
প্রতি পহ্লবে, প্রতি অক্ষে কক্ষে,
যে রঙিন ছবি অঙ্কিত মোর বক্ষে,
সে রঙের ছোঁয়ায় সে রঙিন হবে।
জানি সে কাছে আসবে;
জানি সে আমায় ভালোবাসবে।


তাহারি আঁখিপহ্লব দেখেছি অদ্বয়,
দুনয়ন তারায় লক্ষ তারার ঝিকিমিকি,
অঞ্জলিকারিকা অনুলঙ্খনীয় অদ্বক,
অধর অদ্বয়, তবুও নিরহঙ্কার,
তাহারি চিত্র অঙ্কিত হলো যে-
মোর মর্মের মাঝখানে।


"শুভ নববর্ষে"
(রচনাকালঃ ২৫/১২/১৯৯১)


হাজার প্রাণের মেলায় এক প্রাণ আমি এসেছি,
শ্বাশত এ প্রাণের মেলায় এ জগৎ ভালোবেসেছি।
এ আকাশ এ বাতাস এ মা মাটির টানে-
এসেছি আমি ভেসে যেতে চাই মিষ্টি হাসির বানে।
সূর্যের সৌরভ দিয়েছে মোরে মধুর কিরণ জ্যোতি,
প্রাণের ইন্ধন দিয়েছে, দিয়েছে প্রেম ভালোবাসা প্রীতি।
চন্দ্রিমা মাধুর্য দিয়েছে আর স্বপ্ন দিয়েছে উপহার,
ভালোবাসা প্রীতিবন্ধনে হব এ ভেলায় পার।
এসেছি আপন আলয়ে আমি এ জগৎ মোর ঘর,
হিংসা ভুলেছি ভালোবাসি শধু-কেউ নয় মোর পর।
এসেছি ভেলায় অশান্ত সাগরে-
দিতে হবে প্রাণের সাগর পাড়ি;
এসো এসো এসো সবে-শুভ নববর্ষে
এসো মোরা হাসিমুখে নেব যে সঙ্কল্প তারি।
ঝড় ঝঞ্ঝা বজ্র তুফানে হব নাকো দিশেহারা,
মরমে মরে যাব নাকো যদি হই পথহারা।
ক্লান্তিতে কভু হাল ছাড়িব না-
এ জীবন তরণী বয়ে যাব,
এ জগৎ ভালোবেসে জানি অবশেষে,
সঠিক পথের নিশানা খুজে পাব।


“মাকাল ফল”


তীরে এসে ডুবলো তরী,
তরিৎ বেগে বেনো জল,
তোমায় নানা বলব কি আর
তুমি একটা মাকাল
ফল।
তুলতুলানি নানি রে
তুলাইপাঞ্জি চালের গোটা,
তুলকালামের গোড়া তুমি
তলপাকানির পিরিত
আঁঠা।
তলে তলে শালার গান
তোবা তোবা, ছিঃ,
তরতরিয়ে ভরভরিয়ে
তাপ্পি দেওয়া-
চ্ছি।
তাকে তাকে ছিল নানা
তীরেই ডোবে তরী,
তোমার নানি হবে সেদিন
তার পল নাই
দেরী।