“ক্ষতি কি”


আমার তো মনে হয় , করোনা আর সভ্যতা
হাতে হাত ধরাধরি করেই
চলুক না জীবন
সমাজ আর সাম্রাজ্য, ঠিক যেমনটা ট্রাম্প বলেছেন।
সামাজিক ডিসটেন্স বজায় রেখে আর সতর্কতা মেনেই
চলুক কাজের গতি।
যেন মনে হচ্ছে আজ মানুষকে আবার সত্যিকারের
মানুষ হয়ে উঠতে এমন,
"একে অপরের পরিপূরক"  
হলে ক্ষতি কি!


(সমগ্র বিশ্ব যখন প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের ভয়ে কম্পমান তখন আমি কিন্তু এই করোনাতেই মানব সমাজের কল্যাণ দেখতে পেরেছি। করোনা ভাইরাস প্রচণ্ড ভাবে সংক্রমনাত্মক এবং নিমেষে কয়েক দিন বা কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই লক্ষ কোটি লোককে সংক্রমণ করতে সক্ষম। এই ভাইরাসের সংক্রমণ হলে মৃত্যুও হতে পারে। ভয়টা সেই কারণেই আর |ঠিক সেই কারণেই মানব সমাজের সুষ্ট বিকাশে এই করোনাই হতে পারে শ্রেষ্ঠ অস্ত্র। মানুষ আর করোনা থাক না নিজের নিজের ধারায় যেমন নিতান্ত নখ দাঁত হীন নগণ্য পশুকূল একই সাথে বাস করে হিংস্র মাংসাশী প্রাণী কূলের সাথে একই বনের মাঝে। তাই বলে কি তারা প্রত্যেকেই পূর্ণ বয়স্ক হয়ে স্বাভাবিক ভাবে মরে না! তারা সবাই কি সে সকল হিংস্র জন্তুর শিকার হয়ে থাকে। না , সেটা নয় বরঞ্চ উল্টাটাই ঘটে থাকে। নইলে কয়েক শো হরিণের পাল একত্রে বনে বিচরণ করতে দেখা যেত না।  হরিণের তুলনায় মানুষ অনেক বেশী শক্তিশালী। শুধুমাত্র বলের দিক থেকেই নয় বুদ্ধির দিক থেকেও। তাহলে হীনবল হরিণ যদি বাঘ সিংহ পরিবেশ পরিবেষ্টিত হয়ে তার মাঝেই বিকাশ লাভে সক্ষম হয় তো আমরা মানুষেরা কেন করোনা ভাইরাসের রাজত্বে সুষ্টভাবে বাঁচতে পারবো না!


করোনা আর মানবকূল যদি একত্রে এই ধরায় একচ্ছত্র বসবাস শুরু করে তবে মানুষ সবসময়ই সতর্ক থাকতে বাধ্য হবে। তাদের আচার আচরণ , খাদ্যাভাস, নিরাপত্তা স্বাস্থ্য ইত্যাদি বিষয়ে অতি সচেতন থাকতে বাধ্য হবে তারা। এমন কি তাদের সোসাল জীবনে মেলামেশা অন্তরঙ্গতা , কাম রতি ঘর বাহির সমস্ত জায়গায় তারা অতি সতর্ক থাকতে বাধ্য হবে। একে অন্যের ভালো চাইবে কারণ অন্যে ভালো না থাকলে তো নিজেরই বিনষ্টির কারণ হবে তা। আর করোনা;-


করোনা আমরা যতটা মারাত্মক ভাবছি ঠিক তার উল্টাটাই। যারা ষাট বছরের নিচে তাদের কে করোনা ভাইরাস মেরে ফেলতে পারে না। সাধারণ ফ্লু এর মতই বাড়িতেই দিন কয়েকের ঔষধ সেবনে তা সেড়ে যায়। ইনফ্লুয়েঞ্জা যেমন বাড়ির একজনের হলে একে একে বাড়ির সবারই হবেই তেমনই করোনাও হবে। করোনার ক্ষেত্রে অধিক বয়স্ক মানুষের মধ্যেও মর্টালিটি রেট ৩ থেকে ৪% মাত্র। মানে ১০০ জনের হলে মারা যেতে পারেন মাত্র ৩ থেকে ৪ জন মানুষ। অন্য যে কোনও রোগে করোনার থেকে মর্টালিটি রেট অনেক বেশি। বয়স্ক লোকেদের শরীরে অন্য অনেক ব্যাধি থাকলেই তারা করোনাতে মারা যায়।


কাজেই করোনা কে সাথে নিয়ে যৌথ ভাবে বসবাস করতে আপত্তি কি! যেখানে করোনা আমাদের সামাজিক সুরক্ষা দেবে , মানুষ অতি সচেতন থাকতে পারবে তার কারণে, সংযত হবে আচার আচরণ। সাধারণ ভাবে বলতে গেলে করোনাকে সাথে নিয়ে ঘর করে আমরা কখনো অহং বোধে ভুগতে পারবো না। মানুষ সত্যিকারের মানুষ হয়ে উঠতে পারবে, সমাজ হবে নিস্কলুষ , বিকশিত হবে মানবের হারিয়ে যাওয়া মান আর হুশ। মেদিনী হয়ে উঠবে স্বর্গ সম। বি।দ্রঃ করোনার জন্য যেই আমি আজ হতে ২৫ বছর প্রতি রাতেই ভাল পরিমান সুরা পান করতাম সেই আমি পর পর চার দিন তা নেই নি। কারণ কালোবাজারিতে প্রায় তিনগুণ দাম বাড়িয়ে দিয়েছে লক আউটে। আর আমার মনে হয়েছে যে আমি এত বেশি নেশাখোর নই যে ১৫০ টাকার জিনিশ ৪০০ টাকায় কিনে খেতেই হবে। এতদিন পর নিজেই বুঝতে পারলাম যে আমি মদ্যপানের নেশাটা ছাড়তে পারবো যেটা এর আগে আমি কখনও কল্পনাও করতে পারি নাই।


মর্টালিটি রেট করোনা ভাইরাসের ক্ষেত্রেঃ- (মোটামুটি এমন)


১-০৯ বয়সের বাচ্চাদের ক্ষেত্রে-   0.00%
১০-১৯ বয়সের ক্ষেত্রেঃ-    0.002%
২০ -৪০ বছরের ক্ষেত্রেঃ-   0.05%
৪০-৬০ বছররের ক্ষেত্রেঃ-  1.02%
৬০-৮০ বছরের ক্ষেত্রেঃ-) 1.86%


আসলে কি জানেন এক তো রোগ টা নতুন আর এর নির্দিষ্টি কোনও টীকা বা ঔষধ এখন ও পর্যন্ত নেই আর এক সাথে হটাৎ করে দিন কয়েকের মধ্যেই বহু সংখ্যক লোকের মধ্যে সংক্রামিত হচ্ছে আর ইন্টারনেটের কল্যাণে দেশ বিদেশের খবর নিমেষেই পেয়ে যাচ্ছি আর মৃত্যু মিছিল দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছি, এটাই যা। যাদেরই হচ্ছে বাড়িতে রেখে ট্রিটমেন্ট করবার কথা ভুলে গিয়ে আইসোলেশনে রাখছি তাই। আরে বাবা সাধারণ ইনফ্লুয়েঞ্জাও একজনের হলে বাড়ির সবারই হয়! তখন কি আর সেই ভয়ে আমরা তাকে আইসোলেশনে রেখে আসি।


এই কারণেই আপত দৃষ্টিতে করোনাকে আমাদের অনেক বেশি প্রাণঘাতী বলে মনে হচ্ছে। মর্টালিটি রেটের হিসেব ভুলে গিয়ে অযথা আতঙ্কিত হয়ে পড়ছি। আর কিছুই নয়। করোনাও আর দশ টা রোগের মতই হয় তো বা অতটাও মারাত্মক নয়.  
বর্তমানে সারা পৃথিবীর হিসাবে মর্টালিটি রেট  ৪-৫% । এটা সাধারণ মাত্র হলেও যেহেতু যত লোক আসলে আক্রান্ত তার ২৫% এখনো হাসপাতালে আসেন নাই। তারা ভর্তি হলে রেটটা অটোমেটিক ২।৫-৩ হতে পারে।


কাজেই একটা ভয় নিয়েই বিকশিত হলে মানবসভ্যতা আর তাতে যদি সমাজের কল্যাণ হয় তো ক্ষতি কি!
বেঁচে থাকবার যোগ্য যে সে বেঁচে থাকবে যে বা যিনি যোগ্য নন তিনি বিতারিত হবেন। সে তো ড ডারউইন সাহেব দেড় শো বছর আগেই লিখে গেছেন বিজ্ঞানের খাতায়। এটাকেই ন্যাচারাল সিলেকশন বলা হয়ে থাকে।


তবে সংক্রমণ যতই ছড়াবে মৃত্যুর সংখ্যা ততই বাড়বে আর চিকিৎসা ব্যাবস্থার বিপর্যয় ঘটতে পারে বলেই একে প্যান্ডামিক বা বৈশ্বিক মহামারী হিসাবে দেখা হচ্ছে আর যতটা সংক্রমণ রোধ করা যাবে ততটাই মঙ্গল একটি দেশের পক্ষে আর তাই সকলের কাছে আমার আন্তরিক অনুরোধ সংক্রমণ রোধে সমস্ত সরকারি নির্দেশিকা অক্ষরে অক্ষরে পালন করুণ, ভয়ে নয় নিজে আর নিজের পরিবার কে সুরক্ষিত রাখবার জন্য।)


ধন্যবাদ আর শুভকামনা।