আমি সবসময় বলে থাকি প্রথম লাইনটা দিশা ঠিক রেখে যা ইচ্ছে তাই লিখুন। তারপর ভাবতে ভাবতে এগিয়ে নিয়ে চলুন সে দিশাতে। এ নয় যে লেখবার আগেই চিত্র নাট্য সব কল্পনা বা ছক কষে নিতে হবে। যেটা ঠিক করে নিতে হবে লিখাটি কোন দিশাতে নিয়ে যাব, তা দেশাত্মবোধক হবে বা রম্য বা প্রকৃতি বা প্রেম বিরহের। কী লিখবো তা প্রথম লাইটা যা ইচ্ছে তাই লিখে কল্পনা করতে করতে এগিয়ে যাব। আর একটা কথা, যা হলো কবিতা লেখবার সময় অভিধান ঘেটে শব্দ বা তার প্রতিশব্দ বের করবার চেষ্টা করবেন না। তাহলে আবেগ কেটে যাবে। জানা ভাষায় আগে লিখে ফেলুন। প্রয়োজন হলে, লেখা শেষ হলে অভিধান ঘেটে শব্দ পরিবর্তন করে নিন। কবিতা লিখতে গেলে শব্দের ভান্ডার শিখে নিতে হয় আর তা করতে হলে যেটা দরকার তা হলো বিখ্যাত কবিদের প্রচুর লেখা প্রতিটি শব্দের মানে সহ বুঝে নেওয়া। কবিতা কঠিন হতে হবে এমন কোনোও মানে নেই। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ এর একটি কবিতার উদাহরণ দেই।


বিপ্র কহে রমনী মোর আছিল যেই ঘরে
নিশীথে সেথায় পশিল চোর
ধর্মনাশ তরে।
ধরেছি তারে এখন কহ কী দিব তারে সাজা
মৃত্যু দাও কহিল তারে
রতন পুরের রাজা।
ছুটিয়া আসি কহিল দূত চোর সে যুবরাজ
বিপ্র তারে ধরেছে রাতে
কাটিল প্রাতে আজ।
ব্রাহ্মণেরে এনেছি ধরে এখন কহ কী দিব তারে সাজা
মুক্তি দাও কহিল শুধু রতনপুরের
রাজা।


কত সহজ কথায় কত সুন্দরভাবে ব্যক্ত করেছেন তিনি। কোনও কঠিন শব্দের কচকচানী নেই। সেই কবে পড়েছি , মনে গেথে আছে। আজও লিখতে পারলাম।


আমরাও সেভাবেই চিন্তা করি না লেখতে।


হার্দিক শুভকামনা সহ আপনাদের প্রিয় সঞ্জয় কর্মকার।