প্রেমের কবিতা,"সন্তরণ", বিশেষ খন্ড


(গত সাত আট দিন প্রবল অসুস্থ ছিলাম।মাথার ভিতর যেন একটা প্রলয় ঘটে গেছে এ কয় দিনে। এখনো গন্ধানুভূতি ফিরে পাই নাই। আরো পাঁচ সাত দিন ভালো থাকতে হবে। তবে কেন যেন মনে হচ্ছে কবিতা আর বোধহয় লিখতে পারবো না। লেখার সেই ভাবটাই যেন হারিয়ে গেছে। তাই সন্তরণ যেখানে শেষ করেছিলাম সেই খেই ধরে সামঞ্জস্য মাফিক সেটারই আর একটি বিশেষ খন্ড লিখতে চেষ্টা করলাম)


আজিকে গগনে বরিষণে ঘন-অঝোরেতে বারি ঝরে
তোমারি বিহনে স্বয়নে স্বপনে স্মৃতি সবে ভিড় করে।
আজিকে নয়নে নয়নে তাপিত; আঁধারে বাহিত কাল
আশাহত প্রাণ বিলাপ ও প্রলাপে- গুমরে গুমরে মরে।


তুমি নাই তাই, আশা নাই, ভালোবাসা নাই প্রাণে
তুমি নাই তাই, হুতাশনে বহে কাল; নিদ্রা ও জাগরণে।
তুমি নাই তাই, গরলে বাহিত; ফল্গু সে সুখ হরা
বসুধা আজিকে দলিত মলিন; স্থিরতা নাহিকো প্রাণে।


তুমি ছিলে মোর যুগের সারথী, কালে কালে ছিলে সাথী
সুখ আর দুখ প্রলয় ও তুফানে; ছিলে তুমি সমব্যথী।
স্মরিতে তাহারি মাধুরী বিতানে-ফোটে নাই আজ কলি
মিলে নাই সুর সুরেতে মিলায়ে-গাহিতে দিবস রাতি।


তোমারি বিহনে-বিরহী লগনে; বন্দনা তব গাহি
অকূলো পাথারে ভাসায়ে পরাণ; পথিক আমি এ রাহী।
নিশা যবে ছায় দিগন্তে হায়, আঁধারের আলাপন
পারাবার এ আঁধার; দিতে হবে পার, হতোদ্যম সখী নহি।


লেখাটির বিশেষত্ব : লেখাটির প্রতিটি স্তবক রুবাই ছন্দে লেখা।


প্রেমের লেখা,"সন্তরণ", পঞ্চম তথা শেষ খন্ড


দহনেতে মন আজিকে পরম- ঝঞ্ঝায় হৃদ মাতে
মৌন কেন গো প্রেয়সী হে মোর, শিথিলতা গিরিখাতে!
ঘূর্ণিত ঘাড় কেশের বাহার; লুক্কায়িত আঁখিদল
কোন সে কুহেলী ও মোর সহেলী; হেন মতি ছলনাতে?


গোকুল আমার সাধন ভজন, পূজন কূজন সব ওই তুমি
হৃদ সে দুয়ার ভরাট আমার সেই সাগরে তুমিই রানী।
স্তব্ধ সে গাঁয় খর সে বাতাস-বইছে মরুৎ কান্না ভেজা
বাজছে করুণ রাগ সে ব্যথার; তপ্ত হৃদে প্রহর গুনি।


উষ্ণ আজি নয়ন কমল, নাই কো ধারা; পানির স্রোত
ব্যথায় ধরা আঁখির তারা; জড়িয়ে তোমায় ওতোপ্রোত।
মুদলো কলি নষ্ট সে নীড়-নাই কো সুবাস সুঘ্রাণ তার
অস্তরাগের সুর সে করুণ; ভরলো সে হৃদ বাঁধলো জোট।


প্রকারে বিকারে, আজিকে প্রহারে এলে সে কাঁটার সাজে
দীর্ণ আজিকে, হৃদ সে দুয়ার; ব্যথারই সে-সুর বাজে।
শূন্যতা গ্রাসে গ্রাসিত মেদিনী, নীরবে কাঁদিছে কাল
বিদায় সজনী স্বরূপে সুঘ্রাণে-ভালো থেকো মহী রাজে।


লেখাটির বিশেষত্ব : লেখাটির প্রতিটি স্তবক রুবাই ছন্দে লেখা।