উৎসর্গ : বাংলাদেশ কালেক্টরেট কর্মচারী কল্যাণ সমিতির
বর্তমান আন্দোলনের প্রতি)


একটি প্রমোশন হবে বলে
কত নির্ঘুম রাত কেটেছে হোসেন আলীর
পুলক জেগেছে মনে ক্ষণে ক্ষণে।
একদিন এক তরুণ অফিসার বলেছিল
হোসেন আলী একটি ফাইল আনেন
আমাকে শিখান সবকিছু।
হোসেন আলী পরম মমতায় হৃদয় নিংড়ে
শিখিয়েছিল সব কিছু।
অফিসার হেসে বলেছিল
হোসেন আলী আপনাদের প্রমোশন নেই?
হোসেন আলী আমি দায়িত্ব পেলে আপনাদের দুঃখ ঘুচাব।
তারপর কত কাল চলে গেল
কত ফুল ঝরে কত ফুল ফুটল
কত বসন্ত পেরিয়ে কত বসন্ত এল
উপরে ওঠার সিঁড়ি বেয়ে এতদিনে সে তরুণ অফিসার
কত উচুতে উঠে গেল
অনেক উচু যেখান থেকে হোসেন আলীকে দেখা যায় না।
হোসেন আলীর সিঁড়ি নেই
সে আজও সেখানেই রয়ে গেল।
৩৩ বছর কেটে গেল হোসেন আলীর
আজ যার চাকরি হলো সেও হোসেন আলীর সমান
হোসেন আলী এখন এনালগ
ডিজিটাল যুগে সে পারে না কিছু
ফাইলগুলো মনে হয় বড্ড অচেনা।
ছেলে বলে বাবা তোমার কবে প্রমোশন হবে?
হোসেন আলী কিছু বলতে পারে না
অথচ তারই সমপদের অনেকে আজ অফিসার
শুধু অফিসের ভিন্নতা
এক সময় সে তাদের ভাই বলত
এখন দেখা হলে এড়িয়ে যায়
যদি ভাই বল্লে মাইন্ড করে!
হোসেন আলী অফিস অনেক বড়
এখানে বড় বড় কাজ হয়
বড় বড় কর্তারা চাকরি করে
অথচ হোসেন আলী বড় হয় না
আজও সে ফাইল নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকে
তরুণ অফিসার নাতির বয়সী নাম ধরে ডাকে!
হোসেন আলী প্রমোশনের আশায় করেছে এম এ পাশ
সে এখন এমএ পাশ কেরানি।
আশেপাশের সবাই বড় হচ্ছে
হোসেন আলী সবার সাথে পাল্লা দিয়ে ছোট হচ্ছে
যে তাকে স্যার বলত
এখন হোসেন আলী তাকেও স্যার বলে
তার আর এখন লজ্জা করে না
হোসেন আলীর আজ বিদায় লগ্নে
এতদিনে তার প্রমোশন হয়েছে
আশেপাশের সবাইকে স্যার বলার এক অদ্ভুত প্রমোশন!