(আমার দাদির স্মৃতির উদ্দেশ্যে)


যে পানের বাটাটি পড়ে আছে ঘরে
এলোমেলো; সেটা আমার দাদির
দাদি নেই রয়ে গেছে পানের বাটাটি
মানুষ চলে যায় রয়ে যায় তার স্মৃতি।
বিষন্ন পানের বাটা আজ প্রাণহীন
একটা সময় যার মাঝে সুর উঠত
পান সুপারির মেলবন্ধনে অদ্ভুত সুগন্ধি
যেন কস্তুরির গন্ধে ভরে যেত ঘর।
সে পানের বাটা পড়ে আছে নিরবে
যার গায়ে ছোঁয়া লেগে আছে দাদির
তার তেতুল বিচির মত দাঁতের ফাঁকে
কত কথার ঢেউ খেলত হররোজ
চারপাশে নাতি নাতনি পরিবার পরিজন
কত উৎসুক শ্রোতা, ঠুক ঠুক পান ছেঁচা।
রাণী এলিজাবেথ নেই রয়ে গেছে তার স্মৃতি
পৃথিবীর নানা প্রান্তে ছড়ানো বিচিত্র সম্পদ
আমার দাদি অত বিখ্যাত কেউ ছিলেন না
তার সম্পদ বলতে ওই ছোট্ট পানের বাটা।
দাদি নারী স্বাধীনতা কি তা জানতেন না
জানতেন কিভাবে সংসার আগলে রাখতে হয়
কিভাবে স্বামী সন্তান নিয়ে সুখে থাকতে হয়
তিনি দর্শনের বড় বড় কিতাব পড়েন নি
জানতেন অল্পে তুষ্টি জীবনের বড় দর্শন।
অনেক বিদ্যা, বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় ডিগ্রি
আমার দাদির ছিল না, ছিল না পদ পদবি
তবে তার একটা হৃদয় ছিল পাখির মত
যে হৃদয় ভালবাসত, সবাইকে কাছে টানত।
দাদি অনেক কিছুই জানতেন না
সমাজে বয়ে যাওয়া ঘটনার ঘনঘটা, কূটচাল
তিনি জানতেন কিভাবে গরম ভাতের উমে
সরিষা ইলিশ রাঁধতে হয়, সাথে কলাই শাখ
দাদি অনেক কিছু না জেনেও সফল মানুষ
যে শেষ করেছেন এ দুনিয়ার সফর
নিয়ে গেছেন পরিবার পরিজনের ভালোবাসা।