বাজারে গিয়ে ফিরে এসেছে বাবা
উন্নয়নের জোয়ারে ভেসে যাচ্ছে প্রগতিশীল রাষ্ট্র। কিন্তু তিঁনি ভাসতে পারছেন নাহ, পকেটে রাখা ভাতের দামে ভীষণ ক্লান্ত তাঁর শরীর।
বাজারে গিয়ে ফিরে এসেছে বাবা
সাথে এনেছে ব্যাগভরা দুঃখনামক সবজি।
মাও ব্যাস্ত হয়ে যাচ্ছে, আমার পেটে ক্ষুধার আগুন দেখে।
অথচ উনুনের আগুনে পুড়ছে তাঁর শাড়ীর শরীর। বাবার কপালের ভাঁজে জমে থাকা ঘামে হয়ে উঠছে হাবিয়া দোজখ।


বাজারে গিয়ে ফিরে এসেছে আমার ভাই চোখে করে এনেছে প্রসাধন দোকানের ছবি।
পার্টিতে যাবার মতো ফাউন্ডেশন নয়, শীতের রুক্ষতা ঢাকবার ক্রীম টুকুও পায়নি আমার ভাবি।কেবল পেয়েছে উন্নত রাষ্ট্রের হতাশায় শুকিয়ে যাওয়া এক দিনমজুরের একফালি হাসি।
বাজারে গিয়ে ফিরে এসেছে আমার ভাই
উন্নয়নের জোয়ারে ভেসে যাচ্ছে প্রগতিশীল রাষ্ট্র। কিন্তু সে ভাসতে পারছে না, কিছু আবদারের দায়ে সাঁতার ভুলে গ্যাছে সেই কবে।
আব্বু আজ আপেল আনিও, আর একটা খাতাও, অঙ্ক খাতাটাও শেষ প্রায় আর দুইটা পাতা বাকি।
আমার সে ভাতিজাটি আপেল পায়নি, সে তো আর জানে নাহ ঘামের দামে ভাত যেখানে স্বপ্নছোঁয়া, আপেল সেখানে দুঃস্বপ্ন।


বাজারে গিয়ে ফিরে এসেছে বাবা,
ফিরে এসেছে আমার ভাই।
আর আমি ফিরে এসেছি প্রেম নামক পলিটিক্যাল বেশ্যাপাড়া হতে।
আমার ফিরে আসা দেখে কারোর অপাঙ্গ ঘেঁষে বিস্তীর্ণ নদীখাতের সৃষ্টি হয়নি।
আমার ফিরে আসা দেখে কারোর উর্বর হৃদয় ভূমিতে অঙ্কুরিত হয়নি করুণাফুলের।
আমি ফিরে এসেছি প্রগতিশীল রাষ্ট্রের প্রেম নামক পলিটিক্যাল বেশ্যাপাড়া হতে।


বাজার গিয়ে ফিরে এসেছে বাবা
এনেছে ব্যাগভরা হতাশ ব্যাঞ্জন, মায়ের পুড়েছে শাড়ী।
বাজারে গিয়ে ফিরে এসেছে আমার ভাই
এনেছে বুকপকেটে শুষ্ক হাসি, ভাবি খোঁপা খুলে তাই বেঁধেছে ভালোবাসি।
আমার ফিরে আসায় কেউ থাকেনি, শুধু থেকেছি আমি।


১২-১২-২৩
বিকাল তিনটা তিরিশ