আমি গোদলাগুদলি ছিলাম
তাই বাবা কোলে নিতে পারত না হাঁটার সময়।
মা পিছন থেকে বলত
ঐ তো বাবা কতদূর চলে গেলো।
বাবাকে ধরার জন্য দৌড়াতাম।
পড়তাম। উঠতাম। কাঁদতে কাঁদতে
আবার দৌড়তাম।


বালিগঞ্জ থেকে বাগবাজার
খুবই কম দূরত্ব।


তবু ট্রেন, বাস
পেরিয়ে যেতে হতো মামাবাড়ি।


উত্তর কলকাতার সেই তেলেভাজা
বাবা খুব ভালোবাসত।
আমি বাবার সাথে পাল্লা দিতে গিয়ে
জিভ পুরিয়ে ফেলতাম।


এমনই এক সন্ধ্যা সাতটার সংবাদে
বাবরি মসজিদের জন্য কারফিউ
জানতে পারলো যেই বাবা


তিনজনে মিলে হলুদ ট্যাক্সিতে
সে এক ভয়ংকর সন্ধ্যা পেরিয়ে
ফিরেছিলাম।


বাবাকে দেখে দৌড়েছি
খেতে গিয়ে জিভ পুড়েছে
তবু বাবার সে আগলে রাখা
হাসি মুখ
অনেক না পারার ভিতরেও লড়াই
আমরা করবই জয়...
আমার পুরস্কার পাওয়ায়
হাসি মুখ
এসব নিয়েই বেঁচে আছি আজও।


বাবারা জানে ছায়া কেমন করে আশ্রয় হয়
আশ্রয় জন্ম দেয় নদী অববাহিকার
আর অববাহিকার চিহ্নে
জেগে ওঠে কাব্য গাঁথা
মানুষ তাকেই বলে
পরিবার।


আমি আদর করে অভিমানে
তাকেই বলি সভ্যতার প্রদীপ।


অজস্র প্রদীপ জ্বলতে জ্বলতে
কখন যে আকাশগঙ্গা তৈরি করে...
বাবা, তোমার পাঞ্জাবির গন্ধ
না পেলে জানাই হতো না।


বাবা তোমার খাদির জহর কোট
আমি মাঝে মাঝে পরি
তোমার মতো কালো চশমাও আছে
শুধু ধূমপান করি না
তবে রাগ আছে চোদ্দ আনা...
সব কিছু কী হারিয়ে যায়?