রবীন্দ্রজয়ন্তীর গান বাজনার মাঝে
ভুলেই গেছি আমার রবীন্দ্রনাথকে।


অনেক সাজ, অনেক আলো
অনুষ্ঠান নিয়ে খাওয়া
উৎসব মুখর সন্ধ্যা
সমস্ত কিছুর মাঝে
রবি ঠাকুর নেই।
আমার রবি তো কাছের
মনের ভিতর লুকিয়ে থাকা
জীবনবোধ।


জীবন্ত এক ঝড়।


তোমরা প্রাকৃতিক ঝড় আসছে বলে
সংবাদ দেখছ, নানা মিম বানাচ্ছ
সবই বিনোদন, রবীন্দ্রজয়ন্তীও তাই।


কতটা রবিচিন্তা লুকিয়ে আছে
মনের গভীরে?


আমি একবার রাগ প্রকাশ করেছিলাম
সাহিত্য অনুষ্ঠানে।
অনেকজন বলেছিল, রবীন্দ্র পিপাসু
রবীন্দ্রনাথ না আরও কিছু ।


সামনে অনুষ্ঠান চলছে
আর পিছনে খাবার বিতরণ।
প্রাণহীন বাঙালিরা কী চাইছে
বুঝতে বুঝতেই
অনেকটা কাল চলে গেল।


এরপর যেটুকু বুঝেছি,
রবীন্দ্রনাথ নয়
মানুষ বাঙালিরা কতটা রবীন্দ্রনাথ জানে
সেটুকুই বোঝাতে চায়।


ঐ যেমন পিসিমণির অণুপ্রেরণা
তাই রবীন্দ্রনাথের চর্চাতেও আনতে চায়।


কেউ কেউ তো বলে রবি ঠাকুর ভিউ বেশি
রোজগার বেশি, খায় বেশি।
কে বলে বাঙালি ব্যবসা বোঝে না?
কে বলে জীবন দেবতা সার্থক নয় এদের কাছে?


শান্তিনিকেতন ট্যুর প্যাকেজ,
কাঁসার থালায় ভুড়ি ভোজ
আর হাঁট থেকে গয়ণা কেনা।


রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে প্রবন্ধ লিখতে বললেই টুকলির গুগুল।
আরে চ্যাট জিপিটি যাই করুক
অমিত লাবণ্য ভাবনা, অচলায়তন, তাসের দেশ, নিদেন পক্ষে শ্যামা
কিছু বুঝবে না।


বাঙালি এখন  মনে করে শেষের কবিতাই বুঝি শেষ কাব্যগ্রন্থ।


টেগোর তো বুঢ্ঢা।
উসকা গানা বহুত বোরিং চিজ আছে।


থাক সে সব।
কেউ জানতে চায়নি
আমি কেন অনুষ্ঠানের মাঝে
আবৃত্তি থামাতে বলেছিলাম।


রবি ঠাকুর এসবের উর্দ্ধে।
মননের, মানসের
বাঙালি জাতির এড়িয়ে যাওয়ার
উপায় নেই।
উপায় ছিল না। হবেও না।


ঠাকুর বাড়ি মাংসের ঝোল হোক পঁচিশে বাইশে।
সেলাম বাঙালি, সিরিয়াল, ওয়েব সিরিজে
ঝড় তোলো।
আসুক মকা, মোচা ।


রবীন্দ্রনাথ ঘুমাক।
রবীন্দ্রনাথ উঁই পোকাদের হোক।
বইপোকাতে আমিশ, দুর্জয় বাঁচুক চেতনের হয়ে।


বাংলা মাধ্যম স্কুল
মরুক মিড ডে মিলে।


টেগোরে নাসেনাল আনথেম
কেবল বাঁচুক।
তাও কবে বদলে রাম সীতা যে হবে না।


অবাক হয়ে যাই আজকের গণতন্ত্রে।


এসব শোনার পরও আমাকে চড় মারবেন না?
অপেক্ষা করছি।


রবি ঠাকুর অনেক নিন্দা আজীবন শুনেছেন
বাঙালি ওটাই জানে ভালো।


রবীন্দ্রনাথ নাই বা জানল
আগুয়ান ভবিষ্যৎ সূর্যরা।


রবি ঠাকুর, জল মিষ্টি আর ফুল ধূপে
কষ্ট হচ্ছে না তোমার?
কাঁদবে না একবার নীরবে, নিভৃতে