সেদিনটাও এমনই বর্ষা বাদল ছিলো
স্কুলে গেছি রেনিডে হবে ভেবে,
অথচ স্কুল ছুটি হয়নি।
জমিয়ে বৃষ্টি হচ্ছে। ক্লাসে ক্লাসের থেকে
মজা বেশি। স্যার মিসেরা আসেনি তেমন।
যারা এসেছেন ক্লাস কম, গল্প বেশি।


বাড়ি ফেরার পথে দেখলাম
অসহায় অবস্থায় রাস্তার ঝুপড়িতে
একটা শিশু কাঁপছে।


পরের দিন লাস্ট বেঞ্চের আমি
পড়াশুনোর থেকে ক্রিকেট ফুটবলে মন বেশি যার
ভেবেছিলাম ঐ শিশুটার ছবি আঁকব।
কেন আঁকব জানি না।
অনেকক্ষণ আকাশের দিকে তাকিয়েছিলাম।
অনেকক্ষণ।
ক্লাসে অঙ্ক করছি না বলে
বের করে দিলো।
বের করে দিলো ক্লাস থেকে স্যার...


ঐ মুখার্জী স্যারের সাথে
এই কদিন আগে দেখা হয়েছিল।
এখন পেনশন বের করতে পারেনি।
কী সব হিসেবে ভুল হয়েছে।
বয়স হয়েছে।
শিশুটার কাঁপা শরীর
বৃষ্টির ভেজা কবিতা
রাস্তার ময়লা জল
কিছুই আর আঁকা হয়নি।


অথচ এখন আমি পার্টির একজন।
কাউন্সিলার এক নামেই চেনে।
স্যারকে বললাম,
আমি দেখে নিচ্ছি স্যার ব্যাপারটা।
নিশ্চিন্তে থাকুন।


স্যার তাকিয়ে বলল
তুমি লাস্ট বেঞ্চের সোম তো!


আমি হাসলাম,
বললাম বাড়িতে পাঁচ ছেলে থাকলে
সবচেয়ে কম পড়াশুনো জানা ছেলেটাই
বাবা মাকে দ্যাখে স্যার।
বাকিরা বিদেশ বা নামি অ্যাপার্টমেন্টে চলে যায়।
ধরে নিন লাস্ট বেঞ্চের ছেলেটাই...
স্যার আমাকে জড়িয়ে ধরতে পারেনি,
তবে স্যার চলে যাওয়ার পরে খুব কেঁদেছিলাম।
আমার কান্নার ভিতর দাঁড়িয়েছিল
ঐ বৃষ্টি ভেজা রাস্তার ঝুপড়ির ছেলেটা।


ঝুপড়ির ছেলেটা এক ফ্ল্যাটবাড়ি বানায়
ইঁট বালি সাপ্লাই দেয়।
আর আমি সবই দেখি।
ক্রিকেট ফুটবল দেখি।
তবে ভুলে গেছি। ছবি আঁকতে ভুলেছি।
বৃষ্টিতে ধুঁয়ে যাচ্ছে ক্যানভাস
আর আমার নামটা দেওয়ালে লেখা আছে
ভোট হয়ে যাওয়ার অনেক দিন পরেও
একই ভাবে। লাস্ট বেঞ্চে ব্লেডে লেখা
আমার নামের মতোই। সোম...