কোথায় সে?...
কোথাও না কোথাও সে আছে!
নিজেকে অপাংতেয় ভেবে; কাকজল চোখ দু’টো ঢেকে,
হয়তো কোথাও আড়াল হয়ে; অশথের ছা’য়,
নাম না জানা কোনও পথের ধারে বসে,
কোথাও নিশ্চই সে আছে!


পড়ে থাকা পুরাতন মরচে পরা লাল রেলের বগিটার ভেতরে
সমস্ত রাত চটের ছালা গা'য়;
গুটি-শুটি মেরে শুয়ে আছে; কুঁকড়ে যাওয়া শীতে
ঠক-ঠক হাড় কাঁপানো ঠান্ডায়।
শুষ্ক ত্বক; অমসৃণ শরীরে; যে তোমার উষ্ণতার কথা স্মরণ করে
বুক পকেটে যত্নে ভাঁজ করে রাখা
পুরাতন ময়লা চিরকুটটি চোখের সামনে মেলে ধরে
বিড় বিড় পাঠ করে; কুয়াশা ঢাকা চাঁদের আলোয়,
        - “প্রিয়তম, হৃদয়ের উষ্ণতা নাও!”


তারপর মাঘের কনকনে শীতে, উষ্ণতার সেই সম্বলটুকুন
দ্বিগুন তিনগুন মাত্রা বাড়িয়ে দিয়ে; ঠির-ঠির কাঁপতে থাকা
চোয়াল-সন্ধি হাড়, নিঃসহায় মাংসের পরত আর-
জংঘার ঘর্ষণে; মানবিক উত্তাপের আয়োজনে;
মন্ত্র পাঠের মত নিরব অনুচ্চারিত উচ্চারণে
হয়তোবা বলে ওঠে,
          - “প্রিয়তমা, তোমার ঠোঁটের স্পর্শ দাও!
              আলিংগনে জড়াও! নাও আলিঙ্গনে!
              আমায় নগ্ন করো- হে প্রিয়া,
              জ্বলন্ত ভিসুবিয়াস,  তুমিও হও আজ নগ্না!"


সর্বাংগে ছড়িয়ে দাও; তোমার মেদের নরম ওম!
জড়িয়ে নাও এ কংকালসার প্রেমিকের নির্মেদ কাহন,
দু'মুঠোর উষ্ণতায় তা'কে পোড়াও!
মাংসের গোপনে জমে থাকা; সহস্র রাতের হীম শীতলতা
জিরজিরে হাড়ের মজ্জায়; বহু বছরের কাংখিত সেই শিহরণ স্পন্দন কেমন; কোন মাত্রাতে বাজাতে চাও? বাজাও! জাগাও!
কেমন নৃত্যে নেচে ওঠে সে, কেমন উত্তাপে বাঁচে, বাঁচাও!
দিনের পর দিন, মাসের পর মাস; উপেক্ষার মেঘ জমা
রৌদ্রহীন বিষাদী কাঞ্চনজংঘা
গত বর্ষায় বৃষ্টি ঝরিয়েছিলো একবার অভিমানে, তারপর…
শিউলি ঝরানো শরতের অপেক্ষা, বিরতিহীণ নিশুতির নিরবতা অজানা দহনে অসহ যন্ত্রণায় রূপ নিয়েছে। তুমি হীনা;
যেন আর কাটে না, ভালো লাগেনা!
তুষার ঝড়ে; বরফের পর বরফ জমা পরে, শীতল ব্যথায়
সে আজ বড্ড বেশী টনটনে!
তোমার অস্পর্শে গলবেনা আর পাহাড়ের এই ভার,
এই শীতের রাতে; প্রিয়তমা, তোমাকেই আমার জরুরী দরকার!”