আসবে বলেছিলে।
দূরালাপনির ওপারে দূর থেকে ডেকে বলছিলে,
- "খুব দেখতে ইচ্ছে করছে তোমাকে!
    তোমার কাছে যাবো,
    তোমাকে একটু কাছ থেকে দেখতে চাই!"
কিছুটা অবাক হলেও;সম্বিতে ফিরে এসে বুঝেছি,
    ও তোমার কথা না রাখার দেয়া কথা।
যেমন মাঝে সাঝে;নেড়ে চেড়ে দেখে;মানুষ তার
মাটির সঞ্চয় ব্যাংকটির ওজন,
ওজন বেশি মানে ভেতরে মুদ্রার মান টাকায় বৃদ্ধি পাচ্ছে;
তার টানে ব্যাংকটিকে হাতে আনে
তেমনি টান আছে কী-না তার যাচাইয়ে;অমন পিছুডাকে সে-
ইশারায়; দূরালাপনিতে,
পরিমাপক স্প্রিং নিক্তি লাগিয়ে যেমন পদার্থবিদ মাপে
লৌহের অভিকর্ষ বল।


তোমার ধারণা,
তোমার কন্ঠস্বর কেউ চিনতে পারার মানে;
তুমি হারিয়ে যাওনি তা'র স্মৃতি থেকে।
তোমার সাথে কথায় সে বেশি উচ্ছাস প্রকাশের অর্থ-
মাঝে মাঝে তার আর তোমার কথা হোক; তা-ই সে চায়।
আর যদি ওপাশ থেকে তার চেয়েও বেশি সাড়া পাওয়া যায়;
এই যেমন তোমাদের আলাপচারিতা হঠাত অকারণে থেমে যাওয়া, কথা থেমে যাওয়ার কারণ বুঝতে চাওয়ার আগেই
দু'জনের নিঃশ্বাসের অস্বাভাবিক ওঠা-নামা টের পাওয়া,
তবে তো দিল্লীর লাড্ডু পেয়ে যাওয়ার মত!
আর মুঠো শক্ত করা হাতটা ধরে রাখতে পারার মানে-
তোমার নিজস্বতায় সে একান্তে একান্ত।


যদিও আসবে বলেছিলে,
জানা ছিল; অবশেষে তোমার আসা হবে না, তুমি আসবে না!
কামনার লোভ ছাড়া শুধু ভালোবাসতে কেউ বিপরীত লিংগিক কারো কাছে যায় না!
মানুষ সেখানেই যায়, যেখানে প্রাপ্তিযোগ থাকে,
পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
তুমিও তাই নিরাশা আর শুন্যতার কাছে এলে না!
জানতে-
বরাবরের মত এবারো তোমার চাওয়ার মত করে
এখান থেকে কিছু পাবে না!


তুমি আসলে কখনই বিশ্বস্ত না! তাই এলে না।
বিশ্বস্ত হলে; আগেই বিশ্বাস হ'তো।
বিশ্বস্ত না বলেই আগে কখনো আসোনি,
অথচ আগেই আসা, দেখা হওয়া'র কাজটা- স্বাভাবিক ছিল।
এখন এলে মনে হবে, এ আসা-টা কোন স্বার্থগত।
এটুকু তো জানো অন্তত,
কারো অপেক্ষাই কখনো যাকে অপেক্ষায় রাখে না!
সে আশা নিরাশার দোদুল্যমানতায় ও থাকে না!
হয় আশা করেই না, নয় আশা পূরণ না হলে
অন্য সম্ভাবনার কথা ভাবে।


নদীর অপেক্ষা থাকে মিলনসাগরের
সাগরের গন্তব্য মহাসাগরে।
মহাসাগর অপেক্ষায় থাকে বলো কা'র?
সমুদ্রগ্রাসী যার সঞ্চিত জলরাশি, সে তো ভিন্নবাসী!
তার কী যেতে হয় কোথাও কারো কাছে?
জলেই জ্বলে আগুন; আবার আপন জলেই যে আগুন নেভায়,
পৃথিবীতে থেকেও সে তখন; পৃথিবীর নয় আর!