ঠিক যখন রাত বারোটা,
আমি অপেক্ষা করছি,
দীর্ঘ এগারো বছরের ঘটনার পুনরাবৃত্তির।
দূরে থাকা বন্ধুরা এই সময় ফোন করবে,
আর ঠিক যখন বারোটা বেজে এক,
তখন শুভ জন্মদিনের অনন্ত শুভেচ্ছা জানবে।


আজ নেটওয়ার্কের একটু প্রব্লেম ছিল,
তাই ফোনে বন্ধুদের সাথে যোগাযোগের কিছুটা সমস্যা হচ্ছিল ।
আমি ওদের ফোনেরই অপেক্ষা করছিলাম।
হঠাৎ দেখি ফোনটা বেঁজে উঠলো,
"সখি ভালোবাসা কারে কয় "....
আমি অনেকটা অবাক হয়ে,
হতচকিত ভাবে ফোন টা তুললাম।
দারুণ মায়াময় আর ভয়ার্ত গলায় তুমি বললে,
"আই লাভ ইউ,
শুভ জন্মদিন - অনেক অনেক শুভেচ্ছা"।


কতটা যে ভালো লেগেছিলো,
সে কি করে তোমায় বোঝাই বলো!
মনে হচ্ছিল সার্থক হলো,
আমার এতকালের সব জন্মদিন।
এর আগের সাতাশটা জন্মদিনের সব স্মৃতি,
সব স্মারক,
সব পাওয়া,
মূহুর্তেই বিলীন হয়ে গেলো।
মনে হচ্ছিল,
আবারো পেলাম,
পরম করুনাময় দেবীর আশিষ।
বিশ্বাস করো,
ঐ মূহুর্তে তোমায় দেবী মনে হচ্ছিল।
মনে হচ্ছিল,
আশির্বাদে আশির্বাদে পাগল করে দেবে।
মনে হচ্ছিল,
আমি সর্গসুখ পেয়ে গেছি মূহুর্তেই।
মনে হচ্ছিল,
এক লাফে উঠে বসি,
একটিবার তোমার চিবুক ছুই,
তোমায় জাপটে ধরি,
ভালোবাসায় কাঙালের মত বের হয়ে যাই ঘর থেকে,
রাস্তায় রাস্তায় ঘুরি।
অমাবস্যার রাতে তোমার মিস্টি মুখের জ্যোতসনাতে,
ফাঁকা মাঠ একছুটে পেরিয়ে যায়।
ভূলে যাই আমি কখনো সিগারেটের শেষ টানে,
দুঃখ খুঁজে বেড়াতাম।
ভূলে যাই আমি তোমার বিরহে কখনো,
দুফোঁটা জল ফেলেছিলাম।
তোমাতে এত সুখ,
আগে কখনো পাইনি প্রিয়তমা।
এত আনন্দ আগে কখনোই পাইনি।।


আসলে তোমারতো ফোন করার কথাও ছিলো না,
উপায়ও না।
ইদানীং তোমার কাছথেকে ফোন কেড়ে নেওয়া হয়েছে,
এমনিতেই অনেক দিন বাদে বাদে কথা হয়,
আজ বিকালে যখন তুমি আমার সাথে
তিন দিন বাদে কথা বললে,
তখন আমি বুঝেছিলাম আমাকে ফোন করা,
তোমার পক্ষে অসম্ভব।


মানুষ যখন অপ্রত্যাশিত ভাবে কিছু পায়,
তখন সে দারুণ খুশি হয়।
আমি আজ তা আরেকবার হাড়ে হাড়ে বুঝলাম।
আমি তোমার থেকে অপ্রত্যাশিত অনেক কিছু পেয়েছি।
আর প্রতিবারই অনেক ভালো লাগায় রাঙিয়ে নিয়েছি আমার বিষন্ন মনটাকে ।
তোমার ভালোবাসা পাওয়াটাও আমার কাছে অপ্রত্যাশিত ছিল।
আর এতটা ভালোবাসা যে পাবো,
তাও কল্পনার অতীত ছিল।
আজ যে পরিস্থিতিতে তুমি আমি দাঁড়িয়ে আছি,
তাতে তোমাকে পাওয়ার ক্ষীণ আশা দেখিনা।
তোমাকে চাই,
দারুণ ভাবে চাই প্রিয়তমা।
ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি,
এটাই শেষ অপ্রত্যাশিত পাওয়া হোক।