পরের জন্মে আমি কবি হব ;
তোমার চোখ নিয়ে লিখে ফেলব এক পৃথিবী।

তোমার চোখে চেয়ে,
হারিয়ে যাবো সিমলার পাইন বনে,
হাতে রেখে হাত- পাড়ি দেব অজানায়,
দিগন্তের রাঙা গোধুলী দেখবো ;
শিবালিকের চূড়ায় শ্বেত শুভ্র বরফ দেখবো,
ভরা পূর্ণিমায়।
দূর পাহাড়ের ঝুলন্ত নদীর আছড়ে পড়া দেখবো,
আর দেখবো তোমার গভীর চোখের মারিয়ানা খাত,
তার চেয়েও গভীর অতলে ডুবে যাব,
তোমার চোখের কাজলে ভূলে  যাব পৃথিবীর সব রঙ,
রামধনু ; সাদা কালো সবুজ।।


ঘোলাটে চশমার পুরু কাচের ভিতর থেকে;
সব অস্পষ্টতা মুছে,
শুধু তোমার চোখই দেখবো।
দেরাদুনের কুয়াশাচ্ছন্ন রাস্তা পার করে,
ঘন পাইনের সারি পেরিয়ে।
সমতল থেকে পাহাড়,
আর পাহাড় থেকে সমুদ্র ছাড়িয়ে।
পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্য গুলো,
আমি উপভোগ করব সেদিন,
তোমার ঐ আয়নার মতো দুটি চোখের মধ্যেই।
তোমার তারা রন্ধ্রে নিজের মুখ দেখে,
কাটিয়ে দেব যুগ থেকে যুগ।
ধ্যান মগ্ন হব বাল্মিকীর মতন,
উইয়ের ঢিবি ভেঙে সেদিন জেগে উঠে,
এক নতুন মহাকাব্য লিখবো ;
পরের জন্মে আমি অবশ্যই কবি হব।।


আমি যত বারই ভাবতে বসি,
অথবা অজান্তে আমার ভিতরে যে তুমি আছো,
এসে নাড়া দাও আমার বিমর্ষ মননে,
প্রতি বারই আমি তোমার চোখে মায়ায় হারাই,
তোমার চোখের অদ্ভুত চাওয়া,
আমার মস্তিষ্কের হাইপো থ্যালামাসে শিহরণ জাগায় ,
রক্ত ক্ষরণ হয় করপাস ক্যালোসামে।
টাইম মেশিনের মতো করে স্বপ্নের জগতে চলে যাই।
নির্জন দ্বীপের মাঝে একাকী হাটতে থাকি,
ক্লান্ত পথিকের মত।
হঠাৎ করে তোমার উদয় হয়,
অমাবস্যা রাতে চাদের মত।।


শক্ত হাতে তোমার নরম হাতের স্পর্শ লাগে,
লোমশ বুকে তোমার উষ্ণ নিশ্বাসের বাতাস লাগে।
দুরন্ত ঝড়ের মত তছনছ করে দেয়,
আমার বুকের প্রতিটি রোম,
ভেঙে চুরে খান খান হয়ে ঝরে পড়ে,
মত্ত ঘাসের উপর।
সর্বস্ব উজাড় করা আদরে,
আমার সমস্ত বন্যতা আসে
মধ্য রাতে উন্মত্ত প্রেমিকার মত।
আমি অন্ধ হয়ে,
কবি হোমারের মত ;
সে দৃশ্য বন্দী করব,
কালির আচড়ে ;
ঘর ভর্তি কাগজে।  
ইলিয়ড আর ওডিসি লিখব,
তোমার চোখের ভাষায়,
নতুন এক মহাকাব্য লিখব।
তাই পরের জন্মে আমি কবি হব,
এক আকাশ কাব্য করব।।


তোমার চোখের অদ্ভুত মায়া-
আমাকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়,
আমাকে পুড়িয়ে দিয়ে যায়,
আমাকে অজানা ভবিষ্যতে,
অনিশ্চিত গন্তব্যের দিকে ধাওয়া করে...
তবুও আমি ডুবতে রাজি,
তবুও আমি জীবন রাখি বাজি।
তবুও আমি পদ্য-হীন কবিতা লিখি,
তোমার চোখের মায়ায় আমি ভবিষ্যতের কবি।।