একদিন সন্ধ্যায় ছাদে বসে তুমি আমি,
হঠাৎ তুমি চিৎকার করে,
আমার হাতটা অজান্তে বুকের কাছে চেপে ধরে,
আকাশের ধ্রুব তারার দিকে,
আঙুল উচিয়ে বলেছিলে,
দেখ দেখ
আমি বুঝেছিলাম তুমি আমাকে তারা খসা দেখাচ্ছো।
বললাম তারা খসা!
তুমি বললে, চোখ বন্ধ করো আর উইশ করো,
জলদি।


তুমি চোখ বন্ধ রেখেই আদেশ দিয়েছিলে,
অনেক ভালোবাসা আর অধিকারের আদেশ।
যে আদেশ উপেক্ষা করে এমন সাধ্য কোনো পুরুষের থাকেনা।    
আমি বললাম, কেন?
পরে বলব, জলদি চোখ বন্ধ করো।


বিশ্বাস করো,
সেদিন আমি চোখ বন্ধ করিনি,
তারা খসাও দেখিনি।
জ্যোৎস্নার আবছা আলোয় আমি তখন,
তোমাকে দেখছি,
দুচোখ ভরে দেখছি,
শুধু দেখেই চলেছি।  
মনে হচ্ছিল কিসের তারা খসা,
কিসের উইশ,
আমার কিছুই লাগবে না।


লাল সিঁদুরে রাঙানো কপাল,
লাল টিপের সাথে,
হলুদ আটপৌড়ে শাড়ি।
মুখখানা কতবার দেখেছি,
সেদিনের মতো আর কখনো দেখা হয়নি।
মনে হচ্ছিল আমার আর কিচ্ছু চাই না,
এই মুখ দেখে মরতে চাই,
এই আবেগে ভাসতে চাই,
আমৃত্যু পর্যন্ত।


বিশ্বাস করো,
তখন যদি জানতাম,
একদিন এই মুখ আকাশের কোনো তারা হয়ে,
ধ্রুব তারার পাশে থেকে রোজ দেখবে আমার অসহায়তা ;  
চলে যাবে ছেড়ে,
বহুদূরে  
না ফেরার দেশে।
তবে সেদিন সত্যিই উইশ করতাম।
খসে যাওয়া তারার কাছে চাইতাম,
এ মুখ যেন আমার জন্ম জন্মান্তরের সঙ্গি হয়।
এই মুখ ছেড়ে ​আমাকে এক মুহূর্ত কাটাতে না হয়।  


আচ্ছা সেদিন তুমি কি চেয়েছিলে?
অনেক বার প্রশ্ন করেছিলাম,
কোনো দিন উত্তর দাওনি,
তবে কি আমাকে কষ্ট দিতে চেয়েছিলে!
এই এমন কষ্ট,
এত দূরে সরিয়ে রাখার কষ্ট ;
নাকি অনেক অভিমান তোমার!          


মুখটা আজও বাঁচে,
বুকের ভিতরে।
মুখটা আজও হাসে,
সন্ধা তারার পাশে।
আমি দেখতে পাই সবখানে,
ঐ মায়াবী মুখ আমি ভুলবো কেমনে!  


জানো তোমার মেয়ে এখন অনেক বড়ো,
তোমার মেয়ের-ও মেয়ে হয়েছে,
তোমার মতোই ফুটফুটে।
আমার কাছেই থাকে,
রোজ সন্ধ্যায় যখন আমি একা বসে থাকি ছাদে,
আর তোমার সাথে কথা বলি,
তিতুন আমার পাশে এসে বসে,
আমার পাকা চুলে তোমার মতো করে তার ছোট্ট আঙুল গুলো বুলিয়ে দেয়।
খুব মিস করলে তুমি,
তিতুনের আদর,
তোমার মেয়ে সার্মির বড়ো হওয়া,
আরো কত কি।