এক সময়:
বিদ্যুৎশিখার মতো আমার যৌবন ছুটে গেছে;
এক প্রান্ত থেকে ওপর প্রান্তে।
জ্বলন্ত বহ্নির মতো উদ্-গ্রীব রূপ ছিল আমারও।
ফুসফুসের সংকীর্ণ পরিসরে দম-বদ্ধ হয়ে যেতনা।
বাহুবল ছিল অফুরন্ত
তখন মূল্য ছিল আমারও।


আজ আমার ত্বক ফেটে বেরিয়ে আসে বার্ধক্য,
লাঠি বলে দাঁড়াই উঠে
পদে পদে তাচ্ছিল্য।
অক্ষি কোটর থেকে ঠিকরে বেরিয়ে আসা অশ্রু;
                                               অমূল্য!
কেউ চক্ষুপাত করেনা আমার অভুক্ত পেটে।
একমুঠো ভাতের জন্য লেংড়ে লেংড়ে
গিয়ে বসি দাওয়ায়; কেউ সাড়া দেয় না!
মড়তে যাবো ভাবি; সে ক্ষমতা নেই!
তবুও প্রতি মুহূর্তে মড়ি ক্ষুদার জ্বালায়।


কেউ আসেনা দুটো কথা বলার জন্য
সারাদিন স্মৃতি বুনে চলি।
অজান্তে একটু হেসে উঠলে বলে-
‘বুড়ির মাথার ব্যামো এসে গেছে’
কতদিন নতুন বস্ত্র আবৃত করিনি শরীর জুড়ে;
                                      মনে পড়েনা।
কতদিন শ্যামল শষ্পে করিনি পদচারন!
উঠোন পেরিয়ে বাইরের রঙিন আভা
বহুদিন দেখিনি!
দেখিনি শরীর থেকে গড়িয়ে পড়া মৃত্যু!


অথচ আমার রক্তের ভাগীদাররা;
আমাকে চ্যাংদোলা করে শ্মশানে ফেলে দিয়ে-
পিন্ডি দিয়ে আসতে পাড়লে বাঁচে!।