মা, আমি দেখেছি আমার ছোটবেলা,
ঠাকুমার ছোট ছোট  আবদার  গুলো- করিতে অবহেলা।
কানপেতে শুনেছি ঝগড়া সকাল সন্ধ‍্যা রাতে,
লক্ষ করে দেখেছি ঠাকুমা, চোখের জল ফেলিতো ভাতে।
আমি ছিলাম খুবই ছোট তোমায় পেতাম ভয়,
তোমার আদর্শে গড়লে আমায়, তোমার-ই হলো  জয়।
আলাদা খেল ঠাকুমা আমার ছোট্ট কুরে ঘরে,
কোল খালি করলে ঠাকুমার, বাবাকে আলাদা করে।
বাবা ছিল নিরব দর্শক পারেনি তোমার সনে,
মায়ের দুঃখে কেদেছে কত নিশ্চুপে আনমনে।
এসব, দেখতে দেখতে কখন কবে বড়ো হলাম আমি,
আমি বলতে বোঝায় যাহা হুবহু যেন তুমি।
তোমার আদর্শে গড়িলে আমায় বিদ‍্যা বুদ্ধি ধরে,
শ্বশুর বাড়ি এলাম আমি মাথা উঁচু করে।
তোমার ইশারায় সংসার চলে তোমার চোখেই দেখি,
শ্বাশুমার প্রতি শ্রদ্ধা ভক্তি তোমার কাছেই শিখি।
তোমায় ডাকি মা বলে মা, শ্বাশুমাকে নয়-
কাজ ফেলে মা করি শুধু মিথ‍্যা অভিনয়।
স্বামীকে রেখে হাতের মুঠোয় রাজ করি সংসারে,
সকাল সন্ধ‍্যা ভক্তি করি, কবে বুড়িটা মরে।
দেব-দবী কেউ শোনে না আমার মনের কথা,
অকারনে ঝগড়া বাঁধাই হাজারো দেই ব‍্যথা।
একদিন, তোমার পথ অনুসরণে আঁপত বিদায় হলো,
ঝগড়ুটে ওই বুড়িটা আলাদা ভাত খেল।
আমিও মা, আমার মতো সংসারটা সাজাই,
বুড়ির জ্বালা ভুলে গিয়ে ভালোই সুখে খাই।
তুমি, বাবা যেদিন আসতে মোদের নতুন বাসা-
খাওয়ার পাতে তুলে দিতাম কচি, পাঠার মাংস কষা।
ভাবতাম মনে বুঝি এতক্ষনে, কথা শুনেছে দেবতায়-
তিন ছেলের মা হলাম মাগো, ঈশ্বরের কৃপায়।
অনেক আশা নিয়ে বুকে ওদের, উচ্চ শিক্ষা দিলাম-
ভাগ‍্যগুনে ফুটফুটে তিন পুত্রবধু পেলাম।
নিজের মেয়ের মতো তাদের আদর করে ডাকি-
একটা কথাও শোনে না মাগো, সবাই দেয় ফাঁকি।
আপন মনে  ওরা চলে খাওয়ার ডাক পাইনা-
বাঁতের ব‍্যথায় জ্বলে মরি মা, মলম-টা কেউ দেয় না।
কথায় কথায় ঝগড়া করে বেগল হয়ে যায়-
নিজ নিজ ঘর সাজালো আমি নিরুপায়।
মেয়ে তো নাই, কার কছে এই মনের কথা বলবো-
বয়সের ভারে জীর্ন আজ কেমন করে চলবো।
একাই একাই থাকি মাগো, কেউ আসেনা কাছে-
ছেলেদেরও পাইনা দেখা ব‍্যস্ত আপন কাজে।
তুমি, হ‍্যা তুমি, যদি মা থাকতে আজ, এই ধরনীর বুকে-
দেখিতে মা, তোমার আদরের মেয়ে রয়েছে কত সুখে।
মনের ব‍্যথা বুকে চেপে ডাকি মৃত‍্যু দেবতারে -
শোনে না মা, সে কনো কথা আসেনা আমার ঘরে।
ভূল, ভূল ছিল মা তোমার শিক্ষা ভূল ছিলে মা তুমি-
তোমার পথে চলতে চলতে ক্লান্ত যে মা আমি।  
তোমার রাস্তা ভুলে যদি বিবেক জাগাতে পারতাম-
ছেলের হাতে আগুন নিয়ে গোলোক ধামে জেতাম।।