শকুনের শ্যেন দৃষ্টি এড়িয়ে বেওয়ারিশ লাশ ,
মর্গে টেনে আনা কত যে কঠিন কাজ ;
সে শুধু আমার মত ভূক্তভোগীরাই জানে ,
নাকের ভিতরে সুরসুরি দেয় পচা দুর্গন্ধের ঝাঁঝ্
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তি পালন করতে যাচ্ছি আমরা ,
অথচ সেই লাশ আজও আমি বয়ে বেড়াচ্ছি ;
স্বাধীনতা প্রাপ্তি থেকে অদ্যাবদি ,
আমার ভিতরের আমিত্বকে লাশ করে রেখেছি ।
অনেক বছর ধরে সেই লাশ আমার বুকে
চেপে আছে জগদ্দল পাথর হয়ে ,
বহুবার চেয়েছি তাকে ছুড়ে ফেলতে আস্তাকুঁড়ে , পারিনি ;
সে আছে আমার ভিতরে আমার ছায়া হয়ে  ।
একাত্তরের পঁচিশে মার্চ কিংবা পচাত্তরের পনেরই আগস্ট
বিভষিকার দুই রাত , শোকের দুই কাল রাত ;
সেই থেকে একটি রাতও কাটেনি নিশঙ্ক চিত্তে ,
থামেনি স্বজন হারাবার তীব্র আর্তনাদ ।
ঘরে ঘরে আজও ছেলে হারা মায়ের হাহাকার ,
শহর বন্দর গ্রামে শুনি ধর্ষিতা নারীর আর্তচিৎকার ;
দেখি দুর্নীতি দুঃশাসনের ছড়াছড়ি ,
শুনি শাসিত বঞ্চিত মানুষের রোনাজারি ।
তবে কি পাকহানাদারদের প্রেতাত্মা ভর করে আছে  ,
আমাদের সোনার ছেলেদের মন ও মগজে !
ইচ্ছে হয় প্রতিবাদ করি ঐ সব অনাচারের ,
প্রতিরোধ গড়ে তুলি নৈতিক অবক্ষয়ের ।
পারিনা ; কারন আমি অতি সাধারন, আমার সে প্রত্যয় নেই ;
অর্থ নেই, অস্ত্র নেই , আমার কোন দলীয় পরিচয় নেই ।
নেই পুলিশ প্রশাসনের ছত্রছায়া , নেই কোন ক্যাডার !
স্বাধীনতা পেয়েছি পাইনি নির্ভয়ে বেঁচে থাকার অধিকার ।
ক্ষমতা অস্ত্র আর অর্থের কাছে মানবতা আজ বন্দী ,
বাঁচার তাগিদে বুদ্ধিজীবীরা করে শুধু সন্ধি ,
সব দেখে শুনে বিবেক আমার দিয়েছে আত্মাহুতি ;
লাশ হয়ে মর্গে যাওয়ার নিচ্ছে প্রস্তুতি ।