আমি এখন সম্পূর্ণ একা,
চরম নিঃসঙ্গতা নিয়ে বেঁচে আছি
ঘরবাড়ি আমার আছে আগের মতই,
শুধু অতি পুরাতন জীর্ণতা দেখছি
বাড়ির আনাচে কানাচে।
এতকাল এখানে ভাল ই ছিলাম,
সব ছিল আমার, পরিবার
বাবা মা ভাই বোন আত্মীয় স্বজন,
বন্ধু বান্ধবী প্রিয়তমা স্ত্রী ছেলে মেয়ে
নাতি নাতনি সবই ছিল!
একসময় একান্নবর্তী পরিবার ছিল এখানে,
ছিল গোলা ভরা ধান পুকুর ভরা মাছ,
দিগন্ত জুড়ে ছিল ফসলের মাঠ।
জমিদারী ছিল না ছিল বিত্ত বৈভব,
জমি বেচা কেনা করে হয়েছি ভূমি দস‍্যু  ;
কত মোসাহেব ছিল সারা অঞ্চল জুড়ে,
তারা আমায় দানশীল দানবীর বলতো,
অথচ আমি ছিলাম সুদের কারবারী,
চড়া সুদে ঋণ দিয়েছি করেছি প্রতারণা।
দেনা আদায়ের নামে কত মানুষকে
করেছি সর্বস্বান্ত, নিজে তখন হেসেছি ;
নাম যশ পাওয়ার জন‍্য লোক দেখানো দান করেছি
স্কুল মাদ্রাসা গড়েছি, অর্থ দিয়ে সন্ত্রাসী পুষেছি,
পুলিশ আমলা আইন আদালত সবই আমার
অর্থ বিত্তের কাছে ছিল নতজানু।
সবাই আমায় ভয় পেয়েছে ঘৃণা করেছে,
কারো সাথে বাঁধলে বিবাদ হায়না হয়ে
করেছি প্রাণ সংহার।
স্বার্থে যখন লাগতো আঘাত
আমি  হতাম ভীষণ স্বার্থপর,
নিজের একটু খুশির লাগি ভেঙ্গে দিতাম
কারো সাজানো বাসর।
হয়তো প্রকৃতি তাই করেনি আমায় ক্ষমা
আমার শরীরে বাসা বেধেছে মরণ ব্যাধি,
ভারত সিঙ্গাপুর ঘুরে এলাম ফলাফল শূন্য ;
সমস্ত শরীরে বিষ ছড়িয়ে পড়েছে
ফিরে আসার আর কোন পথ নেই।
সুযোগ বুঝে আপনজনেরা যে যার মত
নিজের প্রাপ‍্য বুঝে নিয়ে কেটে পড়েছে,
অর্থ বিত্ত আজ আর আমার নয়!
কেউ আর আমার খোঁজ নেয় না,
এখন আমি আর আমার এ জীর্ণ ঘরবাড়ি
নিঃসঙ্গতায় ডুবে আছি। অপেক্ষায় আছি
কখন আজরাইলের ডানায় চড়ে
পারি দেব এই ভব নদী!