শুরুতেই বলে রাখী - চরিত্র সবই কাল্পনীক,
এগুলি শুধুই ভবঘুড়ে মনের কল্পনা অলীক,
সুখ - দুঃখ মাখানো অসমাপ্ত এক গল্প,
আঁখী জলে ভেসে যাওয়া - সময় খুব অল্প ।


সে নীজেকে ভেবেছিল ভাগ্যবান, পেয়েছিল সুপর্নার মতো এক প্রেমিকা,
কালোবাজারি, রাহাজানির বাজারে হোক না একটু প্রেমের কথা ।
শ্রাবনের এক নির্মম সন্ধ্যায়, আবছা আলোয় প্রথম দেখা,
মেঘের কালো রং দিয়ে, বিষন্ণতা আকাশে ছিল আঁকা ।


বজ্রের ঝলকানি তে হঠাৎ আলোকিত চারিদিক, মধ্যিখানে একা
ফাঁকা রাস্তাটা এক নিমেষে ভরে দিয়েছিল তার রূপের ছটা
গান্ডিবের ন্যায় ভ্রু তার, পটলচেরা চোখ,
দুধে আলতা গায়ের রং  - গোলাপ পাপড়ির মতো ঠোঁট ।


সময় গেল, দিন গেল - বন্ধু হল রাহুল - সূপর্না ,
রাহুল কবে দেবে প্রস্তাব - অপেক্ষার দিন গোনা ,
পরের বছর বর্ষার দিনে, যখন একবছর হল,
সুপর্না তখন রাহুলকে বলে - আচ্ছা একটা কথা বল,
তোমার সাথে থাকলে আমার বাড়ে হৃদস্পন্দন,
তোমার দেখা না পেলে শুরু করে অন্তর ক্রন্দন ।
সত্যি করে বল দেখি - তুমি আমার কে?
বন্ধু নাকি অন্য কিছু - রাহুল মুচকি হাসে ।
রাহুল তখন বলে তাকে - ভালবাসি তোমায়,
ইতস্তত বোধ হয় - মেনে নেবে কী আমায়?


সেদিন তারা পাশাপাশি অন্ধকার রাস্তায়,
নিঃশব্দে হেঁটে গেল যে যার আলয়,
পরের দিন হল যখন দেখা পুনরায়,
কেমন যেন লজ্জা পায় দুজন দুজনায়,
সুযোগ বুঝে রাহুল তার হাত টা যখন ধরে,
সুপর্না তার ঠোঁটের ছোয়ায় রাহুলকে আদর করে ।


তারপর তাদের আনন্দ ধারা বয়ে গেল শ্রাবনে
কত যত্ন, কত আদর - মাঝে মাঝেই একে অপরকে টানে ।


চলছিল বেশ ওদের প্রেম - চলল বছর তিনেক,
ভাগ্যলক্ষ্মী হাসলো এবার - রয়েছে বাকি অনেক ।
বছর ঘুড়তেই বিয়ের পীঁড়ি সাজানা হল অঙ্গনে,
বাবা মায়ের কথা রাখতে সুপর্না সাজল কনে ।


রাহুল সেদিন বাধা দেয় নি, ছিল সে নির্বাক,
ওদের প্রেমও যে ভেঙ্গে যাবে - প্রকৃতিও হয়েছিল অবাক ।


তারপর আর কী - যেমন টা সবার হয়, !
শ্বশুড় বাড়ি নীজের বাড়ি, বাপের বাড়ি নয়,
যদিও সেথায় অধিকার তার ছিল না তেমন,
দায়ীত্ববতী ঘড়নি - সবাই হয় যেমন ।


জোর করে তাকে বানানো হয়েছে, তার স্বামীর বাচ্ছার মা,
এত তাড়াতাড়ি মা হতে তার একটুও ইচ্ছা ছিল না ।
এখনও তার মাঝে মাঝে রাহুল কে মনে পড়ে,
ঘড়ের ভিতর একলা একলা কেঁদে কেঁদে মরে ।


হঠাৎ একদিন আবার তাদের ফেসবুকে দেখা,
এটাই বুঝি তাদের কপালে ছিল বিধাতার লেখা ।
তারপরে বর না থাকলে মাঝে মাঝেই বলত কথা,
ভাগ করত আগের মতো যে যার মনের ব্যাথা ।


সুপর্না ভাবত তার গর্ভের ছেলে - আসলে রাহুলের,
শরীরের মিলন না হলেও - আত্মায় মিলিয়েছিল তাদের ।
আস্তে আস্তে সময় এল, দশ মাস অতিক্রান্ত ,
মা হতে গিয়ে ফিরবে কী আর সুপর্না জ্যান্ত !


হাসপাতালে নিঃশব্দতা ভেঙ্গে দিল শিশুর ক্রন্দন,
মা হওয়ার আনন্দের তখন নেচে ওঠে সুপর্নার মন ।
সেদিন থেকে রাহুলের পাওয়া যায়নি কোনো খোঁজ,
সুপর্না'র ও মনে পড়ে না, এখন হালকা তার মনের বোঝ ।।

★ অসম্পূর্ণ কবিতা ★