ভিতরে ইচ্ছে ছিলো,
ভয়ের আগল ভেঙ্গে বেরিয়ে দুনিয়াটাকে দেখার।
পারিবারিক দুর্বিষহ টানাপোড়েনে নাজেহাল মেয়েটি যখন বাস্তবতার কঠিন পাথরে ক্রমাগত আছার খাচ্ছে;
নির্দ্বিধায় হারাতে বসা এতদিনের দেখে আসা স্বপ্নের জলছবি,
না:,হয়তো সব শেষ হয়ে যাবে!
কিন্তু সে না থাকলে তার পরিবারের কি হবে?
তার মা ,একটি মাত্র ভাই। ভাইয়ের পড়াশুনা।
কে চালাবে?


পিতৃ ঋণ চুকিয়ে এগিয়ে চলা পরিবারটির
সমাজের সাথে যুদ্ধের পটভূমি রীতিমত তৈরি।
জীবনযুদ্ধের এই সৈনিকের যদিও
তখনও বি.এস.সি চলছে।
নব্য জীবন শৈলী আর সাথে পরিবারের দুজনের মুখের হাসিকে সম্বল করেই বেঁচে থাকা।
মায়ের স্নেহ ছায়া আগলে রেখেছিল পরিবারটিকে, ভাই বোন। বিষদভার একা কাধে বয়ে পূত্রকণ্যাকে পথ দেখিয়েছেন।
মানুষ হাওয়ার মন্ত্র শিখিয়েছেন।


আজ সে মেয়েটার জীবনের মোড়ে
একা রেখে  যাওয়া সেদিনের সেই মুহূর্তগুলো
আঁচড় কেটে যায়।
রাতে ঘুম ভাঙ্গে আতঙ্কে।
কারণ সে তো নিজে সাক্ষী- নিষ্ঠুরতা বর্বরতার।


মাঝের কালো দিনগুলোর অবসান হয়েছে
এখন সে আর ছোটো নেই
নিজকাধে পরিবারের দায়িত্ব তাকে দিয়েছে -
দায়িত্বশীলা নারীর সম্ভ্রম!
মেয়েটি নিজের অস্তিত্ব সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন।
আর অবহেলিত, পীড়িত সে নয়।
নিজের পরিবারের সদস্য দের একটু ভালো রাখতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলে।
ছুটে বেড়ায় এপ্রান্ত হতে ওপ্রান্ত অকপটে।
কি দূর্দান্ত অভিক্ষেপ।
আজও মনে রেখেছে টিউশন ফিস না দিতে পারায়,
তার শিক্ষক ফিস চান নি,
চেয়েছিলেন তার সাফল্য দিয়ে ঋণ মেটাতে।
সেই মানুষগুলোই হয়ত তাকে বাঁচতে শিখিয়েছে।
শিখিয়েছে নিজের স্বপ্নকে আঁকরে এগিয়ে চলা।


দুনিয়ার যত রং ডানা মেলে ধরুক আজ তার সৃষ্টিতে,
স্বপ্নকে সাথে নিয়ে বাঁচুক দিশেহারার দল।
ব্যর্থ প্রেমিকের হৃদয়ের দাগ যেন ফুল হয়ে ফোটে কোনো চন্দ্রমল্লিকার বাগানে।
আজ তবে থাক না,
সেই মেয়েটাই বাঁচুক তার ভিতরে ইচ্ছেটুকু নিয়ে।
আজ বসন্ত,
দোলের আবিরে লেখা হোক না -
আরো কিছু কালো গোলাপের গল্প।
কোকিলের ডাক পৌঁছক তাদের কানেও
যারা কখনো রাত জাগেনি।