মা এখন আর সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারে না;
সময় ক্ষয়ে ক্ষয়ে, মেরুদন্ডে পড়েছে ভাজ,
চোখে পাওয়ারের চশমাটা হয়ে যাচ্ছে অস্পষ্ট!
খাওয়াতে অরুচী, গলা যেন চেপে আছে-
সময়ের করুণ সীমানার কাঁটাতার,
হাতের তালুতে নেই আর কোমলার ছাপ,
খসখসে হাতে মা রোজারী মালা বুনেন
এক একটি সন্তানের মঙ্গল কামনায়।


একদিন ছিলো-
৭১ এর ভয়াল যুদ্ধে এক মাসের ছেলেকে বুকে জড়িয়ে,
বেঁচে থাকার তাগিয়ে জীবন যুদ্ধ,
এগ্রাম থেকে ঐ গ্রাম,
নাগরী থেকে মঠবাড়ী, শাড়ির আঁচলে লেপ্টে থাকা
অবুঝ তিন শিশু।
পিছিনে হায়েনার দল, জ্বলে রাঙ্গামাটিয়া
জ্বলে জ্বলে ছাড়খার দড়িপাড়া গ্রাম!
পোড়া বারুদের গন্ধে রক্তবমি,
কোলের শিশুটি পরম মমতায় পা নাচায়।


একদিন শান্তির কপোত নেমে আসে ধরনীতে;
মা, ধান সেদ্ধ করে, ধান ভাঙ্গে
কুপির তেল ফুরাতে চোখে নামে ঘুম।
আবার নতুন দিনের ডাকে সময় চলে আপন ঠিকানায়,
মা রান্নার তরকারীতে ভালবাসার মশলা মেশায়,
সন্তান খাবে বলে!


সময় আজ বড়ই নির্দয়;
ইচ্ছে হলে দাঁড়ানো যায়, দেখা যায় না,
ছেলে-মেয়েদের চেয়ারাগুলো আগের মতোই দেখেন,
মায়ের চোখ বড়ই অদ্ভুত!
বাস্তবতা দেখেনা, দেখে শুধু ভালোবাসা।


১০/০৭/২০১৪