অন্ধকার ক্রমশই চারিদিক গ্রাস করছিল,
সমুদ্রের তীরে আলোগুলো জ্বলে উঠছিল,
পশ্চাতে সমুদ্র তরঙ্গের কল্লোলের মূর্ছনায়-
সমুদ্র থেকে সদ্য স্নান করে উঠে এসেছিলে,
সারা শরীরে ভিজে সাপটানো পোষাকে,
এক স্থানুবৎ জড় মানবের সামনে।
সমুদ্রের বিশাল জলরাশির স্ফিত উচ্ছ্বাসে,
নীড় মুখী শঙ্খচিলের আকাশের আলপনাতে,
আমি তখন বালুকাবেলায় নিমগ্ন বসে।
হটাৎ সম্মুখে সেই মানবের সাথে চক্ষু মিলনে-
কিছুক্ষণের জন্য দাঁড়িয়েছিলে স্তম্ভিত হয়ে,
এক অনুপম সৌন্দর্য আমি প্রাণ ভরে দেখেছিলাম।
তুমি দ্রুত নিজেকে সংবরণ করে এগিয়ে এসেছিলে,
লজ্জায় শিহরিত হয়েছিল তোমার পদযুগল,
সমস্ত শরীরে ফুটেছিল অপার আনন্দের হিল্লোল,
নিষ্পাপ মননে, ঈষৎ উন্নত তোমার আঁখি পল্লব-
নিঃশব্দ হরিণীর কাজল নয়নের ন্যায় ছিল বিস্মিত,
আমিও ভেসে গিয়েছিলাম এক অপরূপা বন্যায়।
একরাশ অন্তর্দ্বন্দ্বে, তুমি ইষৎ সিক্ত বাহুযুগলে-
নারী অবয়বের স্পর্ধার স্বরলিপি আবৃত করে,
নীরব উষ্মায় ধীর লয়ে অন্তর্হিত হয়েছিলে।
আমার পৌরষত্বের অহংকার-
পশ্চাদ্ধাবন করে নি তোমার চলার পথে,
ফিরেছিলাম বাস্তবের কঠোর পৃথিবীতে।
এখনও কোনও নিদ্রাহীন মধ্যরজনীতে,
চন্দ্রিমার স্নিগ্ধ আলোকে, সদা বসন্তের কুহু কুহু রবে,
আমি দেখি, স্বপ্নাবিষ্ট হয়ে শুধুই তোমাকে-
সেই খোলা ভেজা চুল তোমার শরীরে লেপটে আছে,
মনে হয়, তুমি যেন সেই বনলতা সেন, সমুদ্রের তীরে-
যে শুধু দু দণ্ড পুলকিত করেছিল আমায়।