শরীরের ক্ষয় নিয়ে বেঁচে থাকা ইঁটের ইমারতে,
একটু আকাশ, তাও পেতে গেলে, যেতে হয় ছাদে,
দিনেও তো আলো জ্বলে-
অত্যাধুনিক পাহাড়ের গুহাতে গুহাতে,
আজীবন কাটবে সেখানেই,
মানসিক অবক্ষয় নিয়েই।


নিচের গ্যারেজে, গাড়ি সারি সারি,
স্টাটাস সিম্বলের ছড়াছড়ি,
গম্ভীর গর্বিত মুখে,  লিফ্টে পাশাপাশি,
কথা নেই কারও সাথে,
শুধু অবজ্ঞার হীন দৃষ্টি অপরের প্রতি।


প্রাকৃতিক আলো, আর বাতাস
প্রবেশাধিকার অর্জনে  মাথা খুঁড়ে ম'রে,
ফাইভ স্টার গুহার, কালো কাঁচের আবরণে,
অসূর্যম্পশ্যা, গুহা মানবীরা-
সঙ্গী, সাথি এনে, উদ্দাম আনন্দের তুফান তোলে,
অতিকায় সুসজ্জিত কমিউনিটি হলে।


মাথা গুঁজে পড়ে থাকা সোশ্যাল মিডিয়ায়-
একাকীত্বের জন্ম ,
সঙ্গে সুযোগ সন্ধান আর অবিশ্বাস,
পারিপার্শ্বিক সামাজিক জীবনে তোলে নাভিশ্বাস।
ক্রমাগত বর্ধমান বিত্তশালী সমাজের ভাইরাসের,
সংক্রমণ দরিদ্রের নিঃশ্বাস প্রশ্বাসে,
পরিবর্তিত, উচ্চ নিচ সমাজ বিভাজনে,
দলিত, পিষ্ঠ হয়ে-
নির্ভিক, সৎ, মানুষেরা, অতি কষ্টে বাঁচে।


ক্রমে পুঞ্জীভূত হৃদয়ের ক্ষোভ,
আত্মসমালোচনায় কাঁটা ছেঁড়া,
মধ্যবিত্ত বুদ্ধিজীবীদের সহ্য ক্ষমতাকে-
কেন বিত্তশালী স্বার্থপরেরা দুর্বলতা ভাববে?
কি অধিকারে, স্মিত বিনয়ী সাধারণ মানুষদের
ক্রমাগত সন্ত্রাসী আবহাওয়ার সম্মুখীন করবে?
কেন বাধা দেওয়া হবে, সুস্থ নির্ভিক কণ্ঠস্বর কে?
কেন গণতন্ত্র স্বৈরতন্ত্রে পর্যবসিত হয়ে-
জনসেবা, জনশোষনে পরিণত হবে?


মিছিলের পুরোভাগে শিক্ষিত, বুদ্ধিজীবীদের ঢল,
চলেছে সেই, সর্বগ্রাসী পুঁজিপতি লালিত-
রাজনৈতিক ক্ষমতার শাসক দলের কাছে,
ন্যুনতম স্বাধীন জীবন যাপনের আশ্বাস আদায়ে।


হায়, কি বিচিত্র এই বর্তমান সভ্যতা, কি বিচিত্র এই দেশ?



এই লেখাটির অনুপ্রেরণা পেয়েছি, আমার দুজন অন্যতম প্রিয় কবির
গতকালের দুটি লেখা থেকে।
১) বেশ বেশ বেশ-সম্মানিত কবি শ্রীযুক্ত জগদীশ চন্দ্র মণ্ডল
২) স্তব্ধ ভারত-  সম্মানিত কবি শ্রীযুক্ত গোপাল চন্দ্র সরকার