এই সরু নদীটা এঁকেবেঁকে চলতে চলতে,
চারপাশের জনপদ, প্রকৃতির, মাঝখান দিয়ে-
না ফুরোনো একটা বিশাল সরীসৃপ।


একদিন আমাকে কানে কানে বলেছিল-
একটা লাল সূর্য এনে দিতে।
বলেছিল, ও যে বড় নদীটাতে মেশে,
যার এপার থেকে ওপার দেখা যায় না,
রোজ বিকেলে দেখেছে, লাল বড় সূর্যটা,
বড় নদীটার জলে, আস্তে আস্তে যায় ডুবে।


বলেছিল একটা লাল সূর্য পেলে-
ওর জলেও সেটা রোজ বিকেলে ডোবাবে।
আমি ওর শখটা মেটাতে পারিনি।


ভরা বর্ষায় নদীটার দুকুল ভাসিয়ে
নিম্নচাপের হাত ধরে এল বন্যা,
আশেপাশের বেশ কিছু গ্রাম, শস্যক্ষেত,
সবটাই নদীর জলের নিচে।


আমাদের বাড়ি, পাড়া, সবই জলে ডুবে,
সবাই আশ্রিত গ্রামের স্কুল বাড়িতে,
গ্রামের মন্দিরটার, শুধু ত্রিশূলটা জেগে,
দুপাশে শুধুই দিগন্ত বিস্তৃত জল আর জল।
নিম্নচাপের অবসানে, মেঘ কেটে গিয়ে-
নীল আকাশে সূর্যের হাতছানি।


মন্দিরের চূড়োর ত্রিশূলে জড়িয়ে একটা সাপ-
নদীকে জিজ্ঞেস করেছিল, কবে জল কমবে?
রিলিফের বোটটা দুপাশে ঢেউ তুলে ছুটছে,
সেই বিস্তীর্ণ জলরাশিতে
নদীর ঢেউ এর বাঁধ ভাঙ্গা উল্লাসে,
আমি শুনেছিলাম, নদীটা বলছে,
আজ বিকেলের পরে।


সেইদিন গোধূলি বেলায়,
চরাচর ব্যাপি উচ্ছ্বসিত নদী অবয়বে,
প্রত্যক্ষ করেছিলাম-  
লাল অস্তমিত সূর্যটার অবগাহন।