আয়লো পাড়ার ছেমড়িরা টোপামুচি লইয়া
আরতো খেলুম না পরের ঘরে গিয়া
পরের ঘরে রানতে রানতে শরীর হইল কালা
বিধাতা লেইখ্যা দিছে মাইয়ার এমন জ্বালা --
প্রাণের চেয়ে প্রিয় আমার দুখিনী বর্ণমালা-  
সাজানো মানিক শিশুকালের মধুর স্মৃতিমাখা
মা মা গন্ধ শ্বাসবায়ুতে কত বচন কানে শোনা
দত্যিদানো হুতোমভুতো রাজারাণি গল্প কত
আজো স্মৃতি জুড়ে....
কানু কহে রাই কহিতে ডড়াই ধবলী চড়াই মাঠে --
মাগো তোমার শোলোক বলায় কত যে তার যাদু
শ্যামলা গাই মাঠে চড়ে রাখালছেলের বাঁশি বাজে
রাইকিশোরের প্রেমের গীত মন জুড়ালো তোমার সুরে...
আয়রে বাঘা আয় আয় আমার সোনা না ঘুমায়
দুষ্টুমনা ভারী জ্বালায় পাতিশিয়ালে বেড়া আঁচড়ায়
হালুম হুলুম ওই বাঘা ডাকে
সোনার চোখ ঘুমে ঢাকে --
কত আদর কত স্নেহ তোমার কোলে তোমার বোলে
কত অভয় সুখের কাল তোমার বুকে মাগো...


একুশ এলে পড়ে মনে তোর অপমান সেদিন
দুষ্টরাজের অপকীর্তি অমর্যাদা বিষম ভারী
দুর্বিনীত দুরাচারী ভিন্ ভাষী ওই শাসক
দন্ড ধরে রক্ত ঝরে কালাদিনের গুলি গোলা
তোর গরিমা রক্ষা করে রক্তপিছল পথ দিয়ে গিয়ে
আত্মাহুতি দিলো সেদিন অভিমানী সব মহারণে
তোর সন্তান ছিনিয়ে নিলো উন্নতশির বীরবাহুদল
তোর অধিকার হারা সম্মান ফিরিয়ে আনে জেদ বড়
জয়পতাকা বজ্রমুঠি জিগির তোলে আকাশ বাতাস
জয় ঘোষণা মাতৃভাষার রক্তভেজা পাষাণ বেদী
ডঙ্কা বাজে বিজয় উল্লাস মাতে সবাই বঙ্গবাসী  
হাতে হাতে গর্বনিশান মুক্তিসুরে জীবনগীতি
ধন্য হলো ধন্য হলো বংলাভাষার পরমজিৎ
হাত তোলে ওই বিশ্ববাসী তোর প্রতিষ্ঠা সমর্যাদা
জগৎসভায় জয়ধ্বনি, বিশ্ববীণা সরবে বাজে
প্রাণপ্রতিমা আমার ভাষা চিরদিন গাইবো গাথা
তোমার পায়ে শত প্রণাম নিষ্ঠাভক্তি অটুট অশেষ
আমার ভায়ের রক্তেরাঙা আজ একুশে ফেব্রুয়ারি ! ...