লতিবুড়ি,তেলচিটে ছেঁড়াকাপড়ের ক্ষয়াটে চেহারা কোচকানো চামড়া,
পেটেপিঠে লাগানো,চোত বোশেখের রোদ শুষে খেয়েছে মুখের চর্বিমাংস
অসংস্কৃত জটার বান্ডিল উকুনের ডিপো, মাঝেমাঝেই বিকৃতিমুখে চুলকে শাসন করে
ঘুমভেঙে গ্রাম ছাড়ে কাকভোরে পা চালিয়ে শহরের দিকে, পেট বড় বালাই
মাথায় কচুরশাক আঁটিবাঁধা লতির বোঝা, আগের সন্ধেয় পুকুর ধারে, জলাজঙ্গল
খুটে, মশা রক্ত খায় সাপের ভয়, জীবিকা সংগ্রহে,  শীতগ্রীষ্মবর্ষাকে তুড়ি মেরে হেঁকে যায়                                দোরে দোরে ফ্যাসফ্যাসে গলায় --লতি লেবে গো,কচুরশাক,চারআনা আটআনা একটাকা                                   দুটাকা আঁটি। ও মাসি দশপয়সায় দাও না গো! না না হবেনি, আরো দশ বাড়িয়ে দিচ্ছি, দাও না ;                                  
যাও দিকিনি একোন ! লতিবুড়ি খিদের তোয়াক্কা না করে তিরিক্ষি মেজাজ গজগজে রাগে                                    চলে যায় অন্য দুয়ারে ---
লতি লেবে গো, কচুরশাক, চারআনা আটআনা.....
বুড়ি ঘর ফিরতি মা মড়া, চোলাইয়ের দাস বাপ অন্য মাগের ঘর দেখে, গুরগুরি নাতনীর হাত
ধরে ভিক্কে মাগে উপরি রাস্তায় বাবুদের কাছে, হয়তো জোটে কিছু হয়তো বা না
বছর ঘুড়তে থাকে ফুল্লরা অভাগী যশোদা গৌরবীর ছেঁড়া ফাটা সংসার...
বুড়ির নাতনীটা ডাগর হইচে, কিশোরীবুকে আমের গুটি ধরেছে,বাড়িতে থুয়ে আসতে
হিংস্র দাঁতনখ পুরুষদন্ডের ভয় তাই নিয়মিত দাদির সাথে চলে আসে, শ্রমবেঁচা পয়সায়
আধপেটের ব্যবস্হা না হয় যেদিন অবিক্রীত মাল রাগ করে দলেমুচে ড্রেনের ধারে
ফেলে দিয়ে বাসস্ট্যান্ডে বিশ্রাম নেয় ঢোক ঢোক জল গিলে শুকনো পেটে
দয়ার দানে ভরসা করে রাত বেড়ে গেলে ফেরা হয় না ঘরে তিন কোষ দূর
ছেড়া আঁচল পাতে ছাউনির এক কোণে সতর্কঘুমে ঢলে,
রাতচরা মোদোমাতাল ইতস্ততো রাতের খাদ্য সন্ধানে, লতিবুড়ি নাতনীকে ডাকে --
ইদিকি এইসে শো আমার ধারে, ঢ্যামনাচোদারা টেনে লিয়ে যাবে.....


বহুদিন হল, ''লতি লেবেগো কচুরশাক, চারআানা আটআনা...' শুনতে পাই না আর
হয়তো চলে গেছে পরবর্তী গন্তব্যে !