গাড়ি থেকে নেমে প্রথমবার তাঁকে দেখেছিলাম।
অবাক বিস্ময়ে ছিল সে তাকিয়ে আমার পানে।
ঘর্মাক্ত শরীরে হাতে ছিল কিছু পেন আর নোট বুক।
চলে যাওয়ার পথে অনুভব করেছি পিছনে তাঁর দৃষ্টি।
রোজ হয়েছে দেখা, অপলক চোখে থাকত সে চেয়ে।
একদিন গেলো সে হারিয়ে, দুটি চোখ খুঁজেছে তাঁকে।
হয়তো তরুণীর চলার পথ গোপনে করেছে সে অনুসরণ।
ব্যাকুল তরুণীর মন হয়েছে হতাশ না দেখে তাঁকে।
ট্রেনে বাসে তাঁকে দেখেছি হাতে সেই পেন আর নোট বুক।
কখনো বিনা প্রয়োজনেও নিয়েছি কিছু কিনে।
দেখেছি তার মুখে পরম তৃপ্তির হাসি।
ডাক্তার হয়ে কাজ পেলাম সরকারী হাসপাতালে।
শেষ পারানের কড়ি গোনা রুগীদের সেবাশ্রম।
সেখানেই এসেছিলাম দেখতে মুমূর্ষু রুগীদের ।
দেখলাম তাঁকে, হাসিমুখে নিঃস্বার্থ সেবা করে চলছে সে।
অবাক চোখে দেখলে আমায়, মুখে তাঁর অম্লান হাসি।
জানলাম এক ফেরিওয়ালা এখানে করেন মানুষের সেবা।
হয়তো মনের কোণে জমেছিল একখণ্ড ভালোবাসার মেঘ।
বিনা কারণে চলে যেতাম সেথায় শুধু দেখব বলে তাঁরে।
ডাক পেলাম সেবাশ্রম থেকে, সে ডেকেছে আমায় দেখবে বলে।
দুলে উঠল মন, আজ হয়তো এসেছে সেই শুভ সময়।
শুনব আজ বহু প্রতীক্ষিত সেই কথা, হয়তো বলবে কিছু সে।
মারণ রোগকে আলিঙ্গন করে শুয়ে আছেন এক ফেরিওয়ালা,
সেবকের শান্ত শরীর রেখেছে ঢেকে একখণ্ড সাদা চাদর।