এই ক্ষত সেই ক্ষত নয়


সুধীর দাস রূপম


শরীরে ধরে গেছে পচন
ডাক্তার বলেছে এন্টিবায়োটিক ঔষধ খেলে পচনের ঘাত একদিন শুকিয়ে যাবে আস্তে আস্তে


হাতের আঙ্গুল কেটে গেছে চালিয়ে নেওয়া যাবে
পাকস্থলীতে গ্যাস্ট্রোলাইজার পচন
তন্ত্রে অস্ত্রপ্রচারে, রক্ত পুঁজ হয়তো আর কোনদিন থাকবে না


কিডনিতে প্রদাহ আবার পাল্টানো যাবে
চোখের কার্নিশ নষ্ট, অন্ধ, ফোঁটা ফোঁটা ছিদ্র
চোখ পাল্টানো যাবে
বুকের বাম নিলয় ধরফর করে
বুকের ডান নিলয় হতাশাগ্রস্ত জীবাণু অগ্নিবমি রক্তাক্ত চাপ চাপ


হৃদপিণ্ড কেটে আবার বাল্ব বসানো যাবে
নিঃশ্বাসে শ্বাসকষ্ট প্রদাহ তাতেও পাইপ লাইন দিয়ে শ্বাস চালিয়ে নেওয়া যাবে।


কিন্তু যে তুমি আমার সমগ্র শরীর জুড়ে ছিলে                      
যে তুমি আমার কিডনিতে পাঁজরের হাড়ে                                      
বুকের ডান নিলয় বাম নিলয় ফুসফুস প্রশ্বাসে নিঃশ্বাসে বসেছিলে প্রতিদিন


ফুসফুস জুড়ে লোহিত কণিকায় শ্বেত কণিকা বসত করতে তুমি


সেখান থেকে তুমি চলে গেছো
বুক ক্ষত হয়ে গেছে।


তাজমহল ভেঙ্গে যায়
রং তুলির আঁচড়ে আবার সৌন্দর্য ফিরে আসে
ব্যাবিলনের ঝুলন্ত বাগান ভেঙ্গে যাবে
আবার নতুন ব্যাবিলিয়ন বাগান হবে
শতবর্ষের টাইটানিক জাহাজ ডুবে গেছে
আবার সে নতুন উদ্যমে তৈরি হবে।


মঙ্গল গ্রহের মাটি খুঁড়ে পৃথিবীর মতো আবাস হবে আবার মানবের
চাঁদের স্টাচু ভেঙ্গে জোছনা নামবে প্রতিদিন মানুষের বসতি হবে।


কিন্তু যে তুমি আমার  বুক ক্ষতবিক্ষত করে চলে গেছো না ফেরার দেশে
জানি আর কোনদিন ফিরে আসবেনা!


আর আমার বুকের ক্ষতও কোনদিন সারবে না
বুক ভাঙ্গা এই ক্ষত
নক্ষত্রের প্রলেপ মানে না
চাঁদের স্ট্যাচু জুড়িয়ে দিলেও জ্যোৎস্না প্লাবিত হবে না
এই ক্ষত সেই ক্ষত নয়


এই ক্ষত! যার নাম প্রেম, আমার বিচ্ছেদ,
আমার হারিয়ে যাওয়া ভালোবাসা।


কলকাতা
রাত-০১.১১
২৯,০২,২২