বেলা শেষের শেষ বেলায়


সুধীর দাস


শীতের শীর্ন কুয়াশায় পাতারা ঝরে গেছে সেই কবে
ফুলদল কুঁড়ি যা ছিল সব, সকলকিছু দিয়েছি তোমার চরণে
জ্বালিয়ে দিয়েছি রক্তের লাল প্রদীপ
বুকের চাওয়া পাওয়ার ধুকপুক
স্বপ্নের গালিচা নক্ষত্র ফুল নদী পাখি।


জল চাইতে জলের সাথে ফুল দিয়েছি
প্রার্থনায় দিয়েছি ধুপ দীপ নৈবিদ্য
কাঁসার থালা পিতলের গ্লাস
আমের সরা,মোমবাতি, সুগন্ধী আগরবাতি
বেলপাতা দুর্বার আচুলি বিচলী
প্রার্থনার জয়দেব পদ্মাবতী।


বেদের মন্ত্র মুখস্থ করিনি
পড়িনি কোন চন্ডীর শ্লোক, পুরোহিত দর্পণ
কোন দেবতার দেবালয়ে গিয়ে ভিখারির মতো দাঁড়িয়ে প্রার্থনা করিনি নিজের জন্য
শুধু তোমাকে করেছি প্রার্থনা
তুমি ভালো শুধু সুখে থাকবে তার জন্য তোমাকেই করেছি আরাধনা।


জীবনের যা কিছু প্রয়োজন ভরিয়ে দিয়েছি তোমার  করতলে
কষ্ট হতাশা দারিদ্র দুঃখকে পিছু ফেলে
তোমাকে করেছি ক্লিউপেট্রা।


আফ্রিদিতির সৌন্দর্যের দিকে তাকাইনি কখনো তোমাকে দেখে
তোমার হাসি দেখেছি নক্ষত্রের দ্যুতি ছড়িয়ে মোনালিসার দিকে তাকাইনি কখনো
কেননা তুমিই ছিলে আমার মোনালিসা।


হে সুখের পায়রা,সবকিছু কেড়ে নিয়ে তুমি হয়ে গেলে নিজস্ব আকাশের গাংচিল
আমি পরে রয়ে গেলাম নিস্তব্ধ একা বিধ্বস্ত বদ্ধভূমিতে।


আরো কিছু দিতে চাই!
শেষ বেলায় মহাশ্মশানের পথে চিতার আগুনে পুড়ে পুড়ে যখন শেষ অস্তিত্বটুকু গঙ্গার জলে ফেলে দিয়ে পরিশুদ্ধ হতে হয় জীবনের পরমায়ু।


সেই শেষের অস্তিত্বটুকুও গঙ্গার জলে ফেলে না দিয়ে
তোমার হৃদয়ের শ্বেতকপোত তলে অর্পণ করে যাবো জীবনের বেলা শেষের শেষ বেলায়।


♥️
কলকাতা-১৩ মার্চ-২৩