প্রিয় কোলকাতা


সুধীর দাস


অনেকদিন তোমাকে দেখা হয়নি প্রিয় কোলকাতা
সেই‌ যে কবে নিমতলা ঘাট হয়ে চলে এসেছি
গঙ্গার জল ছুঁয়ে
তারপর তোমাকে আর দেখা হয়নি খুলে খুলে।


গঙ্গার জল ছুঁলে নাকি মানুষের আত্মা পবিত্র হয়।
কিন্তু গঙ্গার জলে ডুব দিয়ে এলাম
সেই নিমতলা থেকে
তারপর থেকে আবার ঘরবন্দি।


পবিত্রতার গন্ধ আজও আর পেলাম না।


অবাঞ্ছিত আমার শহরের রাস্তা
বাড়ির দরজা
বন্ধুবান্ধব
সব যেন এড়িয়ে চলে।


যে প্রিয় মানুষ প্রতিদিন আসতো ঘরে
যাকে একবার না দেখলে মন ভরত না
সেও আজ চলে যায় দূরে দূরে।


কেননা আমি যে অবাঞ্চিত
অপাংক্তেয় অস্পর্শ ‌আমার শরীর
বিপত্নীক আমার দেহজ ভাষা।


দুঃসহ জীবন কাটতে কাটতে একাকী বন্দিনী
নিঃশ্বাস বড় আটকে যায়
তবুও বেঁচে থাকার সংগ্রাম
আবার আসবে আলো
আবার ফোটবে‌ ফুল বাগানে।


কেউ কেউ আসে আবার ফিরে যায়
আকাশের তারা জ্বলে রাত জাগা পাখির মত
নক্ষত্র ছুঁয়ে যায় জ্যোতিষ্ক আলো
কে যেন ডাক দিয়ে যায়
চিনি না তারে।


এখনো  ঘরবন্দি জীবন হে আমার প্রিয় কোলকাতা
ময়দানে ঘুরে আসে মন
পাবলিক লাইব্রেরী ঘুরে আসে হৃদয়
কফিহাউজ ,‌কলেজস্ট্রিট
বইপাড়া বড় দেখার ইচ্ছে জাগে বারবার
রাজপথ ছুঁয়ে‌‌ ছুঁয়ে‌‌ হাঁটতে ইচ্ছে করে খুব।


সব কিছু হারিয়েছি আমি
স্বপ্নরা হারিয়ে গেছে সব
আজ বেঁচে থাকা বড় দায়
তবুও বেঁচে থাকি।


আমার দুটো সন্তান‌
আমার আকাশ
আমার পৃথিবী
আমার হৃদয়
প্রাণ।


বেঁচে থাকি
ওদের নিষ্পাপ অসহায় ‌মুখের দিকে চেয়ে।


কোলকাতা
রাত ৩.২৫
১৯,১২,২০