শিশির ভেজা স্বপ্ন
--সুহেল ইবনে ইসহাক


হিমালয়ের বরফচূড়া থেকে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে
শীতবুড়ির হিম শীতল নিঃশ্বাস ।
দীর্ঘ রাতের কুয়াশার আবরণ আর সকালের শিশিরবিন্দু
সুরমা-কুশিয়ারার ধীর লয়ের স্রোতের ঢেউ,
নদী তীর ও খেয়াঘাটের নৌকার হালকা বৈঠা চলাচল,
ভোরের লাল সূর্যের আলোর বিচ্ছুরিত রেখা মেলে
শীতের সকালে মিষ্টি রোদ,  
শিশির ভেজা গ্রামের গৃহস্থ ও কিষান বাড়ির রৌদ্রজ্জ্বল আঙিনা,
শীতের ছোঁয়ায় হঠাৎ অচেনা অপরূপে পাল্টে যাওয়া চেনা ক্যাম্পাস,
মনে হয় যেন ভূস্বর্গ।
অন্তরের নৈবেদ্য ঢালি দিয়ে সাজানো পুঁজোর থালি,
যদি করুনায় ফিরে দেখো চাহি ।
স্বপ্নরা সব চলে এসেছিল খোলা জানালায় ।
চিকচিকে শিশিরভেজা ঘাসের বিছানায় পা রাখতেই
পাখির পালকের মত নরম ভেজা কণ্ঠের সুরেলা সংগীত।
শিশির ভেজা ঘাস আর জাদুমন্ত্রের গানে মন
দোল খেতো মাঠের কচি ধানের শীষের মতো ।
প্রকৃতিপ্রেমী এখানে মুক্ত আলোয় কুড়িয়ে নেয় জীবনের স্বাদ ।
শহরের ব্যস্ত জীবনে শিউলি গাছ অনেকটা কমে গেছে,
আঙ্গিনার শিউলি গাছটির স্থানে শোভা পাচ্ছে
হরেক জাতের বিদেশী ফুল।
তথাপি শিউলির আবেদন এখনও টিকে আছে বাংলার প্রতিটি প্রান্তে,
এরপরও প্রতিটি দিনই মাড়িয়ে যেতাম ওই ঘাসের মাঠ,
নিজের মত করে শুনে নিতাম বিমোহিত করা কঙ্কনার সুর।
মৃদু গতিতে পথ চলতাম গন্তব্যের দিকে,
অবচেতন মনে জন্ম নিতো ভালোবাসার সাত রং।
রংধনু, ভরা পূর্নিমা, সবুজ ধানের ক্ষেত, জোছনা ঝরা রাত দুপুর।
অদেখা-অজানা সত্তা প্রতিদিন শিশির ভেজা স্বপ্ন হয়ে
চুপি চুপি এসে বাস করে আমার দুনিয়ায় ।


রচনাকাল: ফেব্রুয়ারী ১৮, ২০১৮, টরন্টো কানাডা ।।