চলো না নতুন একটা আকাশ গড়ি
যেখানে রংধনুকের সবকটা রঙ সমান অধিকার পাবে
সব রঙ মিলেমিশে অমরাবতীর মাধুর্য নিয়ে বলে উঠবে-
বৈচিত্র্যই আনন্দ, সবাই আছি বলেই আকাশটা এত বর্ণিল
একে অপরকে পূর্ণতা দিয়ে ভরে তুলেছি স্রষ্টার নন্দনকানন।


সে নতুন আকাশে
লাল রঙ তার সংখ্যা আর শক্তির আধিক্যে বলে উঠবে না –
আমার তরঙ্গ দৈর্ঘ্য সবচেয়ে বেশী বলে সারা আকাশটাই আমার,
আমারই রাজত্ব, আমিই দণ্ডমুণ্ডের কর্তা, আমি যেভাবে চলি সবাই
নির্দ্বিধায় সেভাবেই চলবে – আমার রাস্তাই সাচ্চা বাকি সব ঝুঁট।


নীল তার মেধা আর সৌন্দর্য্যের গরিমায় কাব্য ঢঙ্গে বলে উঠবে না-
নারীদের ভীষণ প্রিয় আমি, কবির রোমাঞ্চ ব্যর্থ আমি না থাকলে,
সাগরের হাতছানি, আকাশের নীলিমা – আমি না থাকলে সব অর্থহীন।
তাই আমি অতো শতো বুঝি না - আমার রাস্তাই সাচ্চা বাকি সব ঝুঁট।
এমনই এক শান্তির আকাশ


সেখানে সবল রঙ দুর্বলটিকে বসায় তার যোগ্যতম স্থানে  
ওরে কমলা, তোর যা ভাল তাও নিবো, আমার ভালোটুকু তোকে দেবো
ওরে হলুদ, তুই সংখ্যায় এতো অল্প যে চোখেই পড়ে না, দূরে কেন ভাই?
কাছে আয়, গাঁদা ফুল শেষ তো কী হয়েছে, ফল পাকার মওসুম আসছে,
ডালে ডালে ছড়িয়ে পর, তুই না গেলে সবুজ নড়বে না, ফল মিষ্টি হবে না,
কাঁচা হলুদ না হলে বাঙ্গালী কনের মন রাঙবে না, ব্যর্থ হবে শুভদৃষ্টি।
এমন শান্তির সে আকাশ – আছে আশা ভালবাসা, নেই দীর্ঘশ্বাস


হঠাৎ লালের মাথায় দুষ্ট বুদ্ধি এল, বেগুনীর বাড়িটা আমার হলে বেশ হত।  
ওরে বেগুনী, তোর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য এত্ত কম, অত্ত বড়ো বাড়ি দিয়ে কি করবি
আপসে দিয়ে দে, নইলে কিন্তু ঝাড়ে-বংশে ... কি বললি, দিবি না, আচ্ছা।
সবাই শোন, বেগুনী সত্যের পথে না, ও মিথ্যা নিয়ন-রীতি চালিয়ে যাচ্ছে,
আজ থেকে ও বাস্তুচ্যূৎ, এ আকাশে আর অন্য কোন পন্থার ঠাঁই হবে না।
কিন্তু সব রঙ লালকে ধিক্কার দিয়ে বলল, না না না, কিছুতেই আর তা হবে না,
রঙে রঙে মিলেছে বলেই স্রষ্টা হয়েছে বর্ণধর
মানুষে মানুষে বিচিত্র পন্থা, অনিন্দ্য সুন্দর
লাল স্বীকার করল, আমি আর রক্ত হয়ে ঝরব না, শুধু মানবতার বিজয়ে
শুভ হোলি হয়ে ছড়িয়ে যাবো মন থেকে মনে, রাঙা পলাশ হব প্রেমোৎসবে।


সবার রং মিলে আকাশটার জন্য ক্ষুদ্র একটি নীতিমালা তৈরি হল–
বৈচিত্র্যই আনন্দ ।
ভিন্নরূপ না থাকলে স্রষ্টার একঘেয়েমিতে মহাপ্রলয় হয়ে যাবে যে


এই আকাশটাই যদি তোমার আমার দেশ হয়, পৃথিবী হয় - মন্দ হয় কি?