মাকে বললাম – মা দেখ, আমার চুলে পাক ধরেছে
মা বলে – ধুর বোকা এ তো পাটের আঁশ – ঘর বোঝাই
ময়লা- হয়ত উড়ে এসে তোর মাথায় আটকে গেছে।
আমি বলি – বয়স তো আর কম হল না মা
মা বলে- তউবা তউবা, এই সেদিনও তুই আরশোলা দেখে
ভয় পেয়ে আমার আচলে মুখ লুকালি- তোর কালা দাদা
তোর কাছ থেকে ধলা চাইতে এলে সেদিনও তো তুই
শাসিয়ে মারতে গেলি।
মাকে বলি- কি যা তা বল না মা, সেতো বহুআগের কথা
এর পরে কতবার চাতালে ধান তুলেছ- কত জনের
মুখে তুলে দিছ অন্তিম জল – গোয়ালের কত
গরু কুরবানি দিছ- বাবা আর ফিরবে না বলে কত
জল ফেলেছ চোখের- সে হিসাব রেখেছ?
মা জানো আমার রাতে ঘুম হয় না।
মা বলে – পীরবাবার কাছ থেকে তেল পড়ে এনে দিব।
তিন ব্যাচ জুনিয়র এক ছোট ভাই বিয়ের কার্ড দিয়ে গেল
মাকে বললে মা ঝাড়ল তার জীবনের শ্রেষ্ঠ দার্শনিক উক্তি
কার্ড ছিড়ে ফেলে তিরিক্ষ মেজাজে বলল- বাল্যবিয়ে হয়ে
হয়েই তো আজ বাঙ্গালির এই দশা – কারো পানে
চাওয়া যায় না -সব হাড্ডিসার রোগা টিঙটিঙে।
আমি আমার অজীর্ণলব্ধ শরীর নিয়ে বিছানায় গড়াগড়ি দেই
নিজেকে ভূমিষ্ঠ শিশু ভেবে কণ্ঠস্বর তার মত আনার চেষ্টা করি
নিশ্চিন্তে মুখ গুজতে কোলবালিশটা এনে দেখি বহুল ব্যবহার্যে
জায়গায় জায়গায় তুলো সরে লেপ্টে আছে ।
মাকে বললে মা সেদিন তুলো ভরে টনটনে করে
বিছানার একপাশে রেখে দিয়েছে।