প্রবহমান জীবনস্রোতের দিকে দুহাত বাড়িয়ে
একাকী মানবাত্মা কাঁদছিলো –
“পরানবন্ধু রে, কাইন্দ্যা কাইন্দ্যা অন্ধ হইলাম;
ভালবাইস্যা ফকির হইলাম,
তবু তোর দেখা পাইলাম না”


ঈশ্বরের সরু সরু পা দুখানি পিছনে মোড়া
অপেক্ষাকৃত সবল দুটি হাতের চাপে
এগিয়ে চলেছিলো,
অথবা, তাঁর কোথাও যাবার ছিল না;
পরিপার্শ্ব সম্পর্কে সম্পূর্ণ উদাসীন।
উচ্চকিত জীবনের চতুরঙ্গে নেই প্রয়োজন,
উপেক্ষায় উন্নত গ্রীবা।


রাজার রাজা গাইছিলো –
“আমি সব ছাইড়্যা তোর শরণ লইলাম,
তোরে চাইয়া পাগল হইলাম,
তবু তোর দেখা পাইলাম না”


প্রাচুর্য্যে  মদমত্ত ব্যস্ত পৃথিবী তাঁকে গ্রহণ করেনি;
শুধু তাঁর বাড়িয়ে ধরা হাতে,
যৎসামান্য অর্থ রেখে,
বিনিময়ে পরমার্থ কিনতে চেয়েছিলো
যারা কিছু দিতে পেরেছিলো,
বা যারা পারেনি, সকলেই
তাঁর অকুন্ঠ মঙ্গলকামনা পেয়েছিলো।


শুধু, দুপাশে বহতা প্রাণের আপাত নিরুদ্বেল তরঙ্গে
তাঁর ওই আকুল করা ডাক,
কোথাও কোথাও, কোনও কোনও প্রাণকে
স্পর্শ করছিলো, দ্রবীভুত করেছিলো;
আবর্জনা পাশ সরিয়ে, বহুযুগের অন্ধকার কে নাশ করে,
কোনও কোনও মনের দেউলে আলো জ্বেলেছিলো...


বাইরে না হোক, ভিতরে কেউ কাঁদছিলো ।।