ওই ভাবে চলে গেল সে
স্ত্রীর কোলে মাথা দিয়ে, শুয়ে
ধোপদুরস্ত, পাট্ভাঙ্গা পোষাকে -
যেন, এখনই কোথাও যাবার কথা ছিল!
যেতে তো হলই - এই ঘর সংসার, নগরজীবন,
হাসি-রাগ-অভিমান-ঝগড়া-আপোষের
প্রাত্যহিকতার এই চেনা ঠাঁই ছেড়ে
এক ধাক্কায় সরে যেতে হল নিরুদ্দেশের নেইঠিকানায়।


হতচকিত বৌটি দিশাহারা, আকূল -
ডাক্তার...ডাক্তার...!
অত সময় তো ছিল না তার হাতে!
হয়তো নিখোঁজ হবার আগে
দাম্পত্যের শেষ আদান-প্রদানের সময়টুকুতে
তৃতীয় ব্যক্তির উপস্থিতি ছিল অনভিপ্রেত !


কপাল জুরে বিন্দু বিন্দু ঘাম,
ঘামের ফোঁটায় ভাসছে ইহকাল...


এখানে ওখানে ইতস্ততঃ জটলা...গুঞ্জন
গুমরানো কান্না, ছড়ানো ক'ফোঁটা চোখের জল
বাহ্যিক কোনও অনুষঙ্গই তাকে বিচলিত করলো না
অবুঝের গোঁ নিয়ে চলেই গেল।


যেন কী ভীষণ মজার একটা ব্যপার -
ছোটো ছেলেটির পরীক্ষা সামনে;
পুজোর ছুটিতে রাজস্থান বা মানালি;
স্বল্পসঞ্চয় না মিউচুয়াল ফান্ড;
ফ্ল্যাটের লোন এখনও সতেরো কিস্তি বাকী -
সমস্তই অমীমাংসিত পড়ে রইল
সবাইকে একসঙ্গে গাছে তুলে এইভাবে
মই কেড়ে নেয়া যেন তার
গনতান্ত্রিক অধিকারের মধ্যে পড়ে!


তবু কি কোথাও কষ্ট ছিল না কোনো !
শিকড় ছেঁড়ার রক্ত ঝরানো ক্ষত;
'যেতে পারি, কিন্তু কেন যাবো?' - চিরদন্দ্বে
মন কি হয়নি দোটানায় উচাটন ?


ঘামের ফোঁটারা সে কথাই বলে গেল;
বেঁকে যাওয়া মুখ সাক্ষী রইল তার;


আসলে সবাই নিরুপায় হয়ে যায়
যার যেখানে যবনিকা পড়ে যায় ।।