মাথায় এক ঢাল চুল ছিল মেয়েটার
বাবা আদর করে নাম রেখেছিল কুন্তলা ।
ঠাম্মা বলতো মেয়েদের এত চুল ভাল না,
বাবা বলতো মেয়ে আমার কেশবতী কন্যা ।


ঠাম্মা বলতো সীতা, দ্রোপদীর চুল ছিল সর্বনাশের কারণ,
বাবা বলতো আমার মেয়ের চুলে হাত দেয়
এ যুগে নাই সে রাবন, সে দুঃশাসন ।
ঠাম্মা বলতো, ওরা কোনদিন মরেনি, মরবেও না ।
মাথায় এক ঢাল চুল ছিল মেয়েটার ।
বাবা বলতো, টিভিতে দেখবে মেয়ের চুলের বিজ্ঞাপন ।
ঠাম্মা গালে হাত দিয়ে বলতো আঃ - মরণ !


সপ্তদশী কুন্তলা লম্বা বেনী ঝুলিয়ে রোজ স্কুলে যায়
ইভ টিজিং হয় রোজই, পাড়ার গলিতে
কিংবা প্রকাশ্যে রাস্তায় ।
সেদিনও যাচ্ছিল সে সকুলে
কিনতু সেদিন সীমা ছাড়িয়ে গেল,
মস্তান গুলোর দলটা কুকুরের অধম
কেউ বলল, চুলের দেমাক, কেউ বলল
না না রূপের...
ওরা হাসল হি হি করে
বলল ভাঙবো না কি গুমর?


দাঁতে দাঁত চিপে চলছিল কুন্তলা
কিন্তু তবু শেষ রক্ষা হলো না ।
কেউ তার চুল ধরে টানলো
তো কেউ দিল তার শরীরে হাত ।
চুলের অভিমানিনী নয়, নারীত্বের অপমানে
জ্বলে উঠল সে ....।
চটি খুলে পটাপট বসিয়ে দিল একজনের মুখে,
ঞ্জান নেই কুন্তলার ...মারছে তো মারছেই ..
ততক্ষণে খুলে গিয়েছে তার শাড়ী, ব্লাউজ, সায়া
ছিঁড়ে ফেলেছে কুকুরের দল


চুলের মুঠি ধরে বনবন ঘোরাচ্ছে
আরও একবার বিবস্তরা হলো দ্রৌপদী
কিন্তু কৃষ্ণ এলো না ।
সমবেত জনতা দেখল নীরবে মাথা নত করে
ঠিক যেন কুরু রাজসভা ।
পথচারী বলল বটে, ছিঃ ছিঃ কি অন্যায় !
ফিসফিস করে কেউ বলল পুলিশে খবর দে
উত্তর এলো, পাগল !


উঠে দাঁড়িয়েছে কুন্তলা,
চুলের ঢালে লজ্জা ঢেকেছে তার ।
ঠাম্মা ঠিকই বলতো -
দুঃশাশনরা মরে না কোনদিন
তাই বারবার দ্রৌপদী হয় বিবস্ত্রা
শুধু কুরু রাজসভা নয়,
দ্রৌপদী আজও কাঁদে প্রকাশ্য রাস্তায় ।
মাথায় এক ঢাল চুল ছিল মেয়েটার .........