বড় সুখের ছিল সে সময়
আমরা শীতকে সম্বর্ধনা দিতাম
শীতের আগমনী উৎসব...
ঠাম্মা বলতো শীতবুড়ি আসছে
ভোরবেলা উঠলে দেখতে পাবি
কখনো বা উঠেওছি..
ঘন কুয়াশাকে ভেবেছি শীতবুড়ি
কাজ নেই বাবা-
আবার লেপমুড়ি...


বড় সুখের ছিল সে সময়
পাড়া গ্রাম তো?
বড্ড খোলামেলা...
সাজসজ্জার বালাই তো ছিল না মোটেও
তবু গরম জামাকাপড়ের ধূম ছিল খুব
জুট ফানেলের জামা, মলিদা চাদর
কাপড়ের পা ঢাকা জুতো,
আর কোর্টের বিচারপতির মতো টুপি
মহার্ঘ্য বস্ত্র ছিল যেন...
সকাল বিকাল বন্ধুদের সাথে আগুনে
হাত পা সেঁকা...
হাতে মুখে কালি মেখে ঘরে ফেরা
সন্ধ্যার আঁধারে গ্রাম মুখ ঢাকত তখন...


বড় সুখের ছিল সে সময়
ঠান্ডা খেজুররস পাটালিগুড়
পিঠে পুলি পায়েস...
চড়ুইভাতি বনভোজনের মহোৎসব-
কালীতলায় চাদর মুড়ি দিয়ে----
রাত জেগে যাত্রা পালা দেখার সুখ
বড় সুখের ছিল সে সময়....


এখনও শীত আসে জাঁকিয়ে
দিল্লীশহরের শীত...
এশীতের ত্রাস আছে
যেন উগ্রবাদী হামলা...
দিনরাত হু হু শব্দে বইছে শৈত্যপ্রবাহ
যেন কামান মর্টার...
কত রঙ বেরঙের দামি দামি শীতবস্ত্র
আমার স্বপ্নের শীতবুড়ি চাপা পড়ে গেছে
নাগরিক শীতের পোষাকের নীচে
স্মৃতি খুঁড়ে খুঁজতে থাকি
আমার ফেলে আসা শীত
পাই না তো
সে শীত এখন নস্টালজিয়া


বড় সুখের ছিল সে সময়...