খোকনবাবুর ছোট ছেলের এবার মাধ্যমিক
প্রস্তুতিটা মন্দ নয়, চলনসই ঠিক।
নাম তার বাবুসোনা, মেধাবী ছাত্র...
শান্তশিষ্ট স্বভাবগুনে সবার প্রিয় পাত্র।


খেলাধুলো রোজই তার বিকেলবেলা থাকে,
ছবি আঁকাও চলে তার পড়াশুনোর ফাঁকে।
পাশাপাশি আছে তার ক্রিকেট সাঁতার
বাবুসোনা ভালো ছেলে অলরাউন্ডার।


খোকনবাবুর আস্থা ভারী বাবুসোনার উপর...
এমনিতে সে ব্রিলিয়ান্ট, জনা সাতেক টিউটর!
বাবুসোনার মা'এর চোখে ঘুম আসে না রাতে...
তিনিও বসে রাত্রি জাগেন ছেলের সাথে সাথে।


সকালবেলা বাবার হুকুম, "চলবে না আর ফাঁকি!
মাধ্যমিকের আর তো মোটে দিন-কয়েক বাকি!
খেলাধুলো শিকেয় তোলো, চাই না কোনো ত্রুটি
এই কটা দিন কেবল পড়া, নিয়েছি আফিস ছুটি।


রুটিন মাফিক পড়াশুনা ইচ-এন্ড-এভরি মোমেন্ট
তোমায় বাছা পেতেই হবে নাইন্টি ফাইভ পার্সেন্ট!
মনে রেখো এটাই তোমার সবচে' বড় পরীক্ষা,
মেরিট লিস্টে প্রথম হলেই সফল হবে শিক্ষা।"


অবশেষে বাবুসোনা দই-চন্দন কপালে
বাবা মায়ের সঙ্গে চলে পরীক্ষার হলে।
ঠাম্মা-দাদু স্নেহ ভরে দিলেন মাথায় হাত...
"বংশের মান রাখিস দাদু, দিচ্ছি আশীর্বাদ।"


বিদেশ থেকে ছুটকি মাসি পাঠিয়েছে ই-মেইল
"বোর্ডে প্রথম আসা চাই, উইদাউট ফেইল!"
পথের মাঝে দেখা হলো হেড-স্যারের সাথে...
"টু-দ্য-পয়েন্ট উত্তর দেবে, ভুল করো না তাতে!"


জেঠু বলেন,"পরীক্ষা তোর হবেই সুপারহিট!
সঙ্গে করে নিয়েছিস তো পরীক্ষার এডমিট?"
পাড়াতুতো মামা কাকা দিলেন এডভাইস...
"উত্তর-পত্র অবশ্যই দিস যেন রিভাইজ!"


অভয় দিয়ে পিঠ চাপড়ে বাবা দিলেন ফানডা...
"প্রশ্ন যতই কঠিন হোক... রাখিস মাথা ঠান্ডা!"
বাবুসোনার কি যে হলো... হাত পা হলো হিম!
চোখে আঁধার নেমে এলো... মাথাটা ঝিমঝিম!


প্রশ্ন-পত্র হাতে পেয়ে হারিয়ে গেল সেন্স...
এমার্জেন্সি ফোনকলে এলো এম্বুলেন্স!
ধীরে ধীরে জ্ঞান ফিরলো ঘন্টা তিনেক বাদে...
বাবুসোনার মাথার কাছে মা ফুঁপিয়ে কাঁদে!
-------------------------------------------
(অধিক প্রত্যাশা অনেক সময় হতাশার কারণ হতে পারে)
✍️সুলেখা রায়।(কলকাতা)