মৃত্যু এসে রাজার বেশে সাজিয়ে নিয়ে যাবে আমাকে, জন্ম মুহূর্তে মৃত্যু আমায় কথা দিয়েছিল।
অন্তিম যাত্রাকালে আমার প্রিয়জনেরা অশ্রুজলে বিদায় জানাবে আমাকে... সাদা কাফনে ঢাকা আমার নশ্বর দেহ দুধসাদা ফুলে সাজিয়ে দেবে আমার বন্ধু-স্বজন। মাথার কাছে জ্বলবে সুগন্ধি ধূপ। আমার অনন্তলোকে যাত্রাপথে সঙ্গী হবে প্রিয় বন্ধু-স্বজনেরা.... হ্যাঁ, মৃত্যু আমায় কথা দিয়েছিল।
মৃত্যু আমায় বড় মুখ করে আশ্বাস দিয়েছিল.... জীবন হোক না যেমন-তেমন, মৃত্যু তোমার গৌরবের হবেই।  
নাহ্! মৃত্যু কথা রাখেনি!
জীবনের মতো মৃত্যুও প্রতারণা করেছে আমার সাথে।
বিষাক্ত মারণ ভাইরাস ছুঁয়েছিল আমাকে...
একদিন হঠাৎ ভীষণ জ্বরে জ্ঞান হারিয়ে পড়েছিলাম রাস্তার ধারে। পথ চলতি মানুষ সংক্রমণের ভয়ে কেউ এগিয়ে আসেনি আমার দিকে। পথেই আমার মৃত্যু হলো... ঠাঁই পেলাম মর্গে।
মৃত্যুর পরেও আমার দেহটা অচ্ছুৎ রইলো।


হাসপাতালের মর্গ থেকে কালো প্লাস্টিকে মোড়া আমার শবদেহ দূর থেকে এক ঝলক দেখে গেছে আমার সন্তান।
পৃথিবীকে শেষ বিদায় জানিয়ে আমি নিজেই নিজের শবদেহে ফুল দিয়েছি!
আমি আজ নিজেই নিজের জন্য ফেলেছি দু'ফোটা চোখের জল।


পূব আকাশে কালো মেঘ জমছে। বোধ হয় বৃষ্টি নামবে।
বৃষ্টির ফোঁটারা সংক্রমণের ভয় পায় না...ওদের অভিধানে মহামারী শব্দটা নেই।
ভাইরাস ওদের স্পর্শ করতে পারে না।
ওদের তাই সামাজিক দূরত্বের বালাই নেই... ওরা সব্বাই এসেছে মহাসমারোহে আমাকে শেষ বিদায় জানাতে!!
---------------------------------------
✍️সুলেখা রায়।(কলকাতা)
কবিতাটি কোরোনা মহামারীকালে লেখা।