পৃথিবীর বাগান জুড়ে বিষধর কীটেরা অতর্কিতে হানা দেয় বারবার!
সদ্য ফোটা কলিদের নরম পাপড়িগুলো ছিঁড়ে ফেলে নৃশংসতার চিহ্ন রেখে যায়।
বুকের ধন বুকে আগলে তরু-লতাদের  অসহায় চাপা আর্তনাদ!
ভীত-সন্ত্রস্ত কুঁড়িগুলো হয়তো আর পাপড়ি মেলবে না কোনোদিন।
মিস্টি-মধুর সুগন্ধে বাতাস ভরিয়ে তুলবে না হয়তো আর!
তারপর একদিন ফুলেরা হাসতে ভুলে যাবে!
থেমে যাবে পাখিদের গান।
নদীরাও পথ হারাবে মাঝপথে।
বন্ধ হবে ছয় ঋতুর আনাগোনা।
শিউলির সুবাস ছড়িয়ে শরৎ আসবে না.... বসন্তে কোকিলের কুহুতানে আকাশ-বাতাস মুখরিত হবে না হয়তো আর!
রিমঝিম বৃষ্টি এসে শুকনো মাটি ভিজিয়ে দেবে না!
বনে বনে ময়ূর পেখম মেলে নেচে উঠবে না হয়তো আর...
আকাশে রামধনুটা সাত রঙের বাহার ছড়িয়ে খিলখিল হেসে উঠবে না হয়তো আর কোনোদিন।
ফুল-ফলহীন শুকনো কঙ্কালসার বন্ধ্যা বন-বনানীর দীর্ঘশ্বাসে বাতাস ভারী হবে একটা অনিবার্য ধ্বংসের পূর্বাভাসে।
সভ্যতার ধাতব দানবীয় গর্জনে কান পাতা দায় হবে।
সেদিনও হয়তো নিয়ম মেনে সকাল হবে... দিনের শেষে আসবে রাত।
ভোর হতেই শতগুন তেজে জ্বলে উঠবে সূর্য!
প্রচন্ড দাবদাহে রুক্ষ পৃথিবীর বুকে ছুটবে আগুনের স্ফুলিঙ্গ।
জরাগ্রস্থ রুগ্ন ক্ষয়াটে পৃথিবীটা তার নিরন্তর গতির ভারসাম্য হারিয়ে ফেলবে হয়তো একদিন।
তারপর জ্বলন্ত আগুনের পিন্ড হয়ে নিজের কক্ষপথ ছেড়ে ছিটকে বেড়িয়ে পড়বে মহাশূন্যে।
শীতল হতে হতে কেটে যাবে কোটি কোটি বছর...
তারপর একদিন হয়তো এক নতুন পৃথিবীর জন্ম হবে!! (গদ্য-কবিতা)
-----------------------------------------
✍️সুলেখা রায়।(কলকাতা)