সেই বসন্তে তুমি আসতে চেয়েও আসলে না,
শুরু হলো আমার বিরামহীন প্রতিক্ষার পালা।
ফাগুন আসে বনে বনে ফোটে ফুল,
               কোকিল কণ্ঠে তোলে সুমধুর গান
দক্ষিণা বাতাসে ওড়ে দীঘল  কালো চুল।
অশ্রুজলে কাজল ধুয়ে আবার আঁকি
ভাবি এই বুঝি এসে  দরজায় নাড়া দিলে কড়া।
প্রমত্তা পদ্মা হয় বেগবান, আসে ভাঙ্গন  
রক্তের স্রোতধারায় খরস্রোতা-
মেঘনা যমুনা সুরমার পানিতে নামে অথৈ ঢ্ল
উথাল-পাথাল ঢেউ হয়ে ওঠে রাক্ষসী ।


রাতের কোলে মাথা রেখে গল্প শোনার আয়োজনে
নিঃশব্দে হেঁটে চলা মৌমিতা মাড়াই
মিটিমিটি জোনাকির জ্বলানেভা মুখোরতায়,
হয়তো  চুপিচুপি আসছো তুমি এই ভেবে।
রাত পেরিয়ে সকাল আসে সকাল পেরিয়ে রাত
অনাবিল মুহূর্ত ভরে ওঠে পৈচাশিক হাসির রোলে
কানে ভেসে আসে দপদপ দপদপ  বুটের শব্দে-
মুহুর্তে মেঘের দামামা বাজিয়ে দ্রিমদ্রিম ঠাসঠাস
কেঁপে উঠলো সোনার এই বাংলার দিকবিদিক।


পিচে ঢাকা রাজপথ থেকে বনফুল দূর্বাদলে ঢাকা
অতি চেনা এঁকেবেঁকে বয়ে চলা মেঠো পথ
পরিবর্তণের মুছে ফেলা গ্লানি মাথায়-
অসংখ্য নর নারী শিশু বৃদ্ধ  হয়ে যায় শরণার্থী।
আচমকা শান্ত মেয়ে শ্যামল বাংলার দামাল ছেলে
মধ্যরাতে জেগে উঠে ছুটলো,ছুটলো -
ছুটে ফিরলো দিকবিদিক মাঠ-ক্ষেতে, বন-বাদাড়।
গায় পরে তারা পাতার পোশাক,  ঘুমহীন চোখ
শয্যা পাতে জলে তারা,শয্যা পাতে ডোবানালায়।


পাতায়ন খুলে অপেক্ষায় থাকি তুমি আসবে
নিঃশব্দে হেঁটে চলে তোমার মৌমিতা
ফেলে আসা দিনগুলো স্মৃতি হৃদয় ছেদ করে
ফাটা বুকের চাপা কষ্টগুলো কখনও ফাঁস হয়
স্বপ্ন নয়ন স্পর্শ করে অন্তহীণ পথে হাঁটে দুজনের
১৬ ডিসেম্বরে ফিরে এলে, একটি স্বতন্ত্র পতাকায়
বুকের রক্তে রঞ্জিত তেজস্বী রাঙা সুর্য হাতে।
পাকিস্তানের শোষণ থেকে মুক্ত হয়েছে এই বাংলা,
সমস্ত উৎসব পেরিয়ে আবার আসে বসন্তের পালা
জানালার কাঁচ ভেদ করে পাই তোমার  স্পর্শ।


৮/৭/২২