তোমার' প্রতি তীব্র ভালোবাসা অন্ধ করে দিয়েছিল
ভুলে গিয়েছিলাম অতীত বর্তমান ভবিষ্যৎ,
সমাজ সংসারের আচার-নিয়মের কথা শুনলে
ধপ করে জ্বলে উঠতো গা।
তোমার সাথে কথা না বললে
আমার পৃথিবীতে ফুল ফুটতো না, পাখি গাইতো না গান,
প্রজাপতি মেলত না তার রঙিন ডানা-
বুকের নদীতে উঠত উথালপাতাল ঢেউ।


দিনের কর্মব্যবস্তা রাতের নিঃসঙ্গতা জুড়ে
ভাবনায় ছিলে শুধু তুমি তুমি আর তুমি।
কোথায় আছ কি করছ খেয়েছ কিনা,
সব ঠিকমত চলছে কিনা।
আমার জগৎটা হয়ে গিয়েছিল বড্ড সংকীর্ণ।
লোকালয় ভুলে গিয়েছিলাম
কারো সাথে মিশতে ভুলে গিয়েছিলাম
বড্ড একলা একা হয়ে গিয়েছিলাম।
ঘর ভালো লাগতো না বারান্দা ভালো লাগতো না
সারশূন্য মনে হতো সব,'
দিনমান অপেক্ষা ছিলো শুধুই তোমার জন্য
কখন বাজবে সেলফোনে রিংটোন ধ্বনি,
ভেসে উঠবে তোমার অবয়ব।
'তোমাকে' ভালোবেসে নিদারুণ আগুনে পুড়েছি সারাক্ষণ।


পৃথিবী আমার, তোমার কাছে কিবা এমন চেয়েছিলাম বলো?
বন্ধুত্ব বন্ধন সহমর্মীতা একবিন্দু ভালোবাসা এই তো?
তুমিও দিব্যি কেটে বলেছিলে ছেড়ে যাবে না,
কে জানতো যাকে মেনেছিলাম এক পৃথিবী
সে ছিলো ক্যালাডিয়াম, ফিলোডেনড্রন
কে জানতো মাচাং এর সরু উরু বেয়ে বুনো তেলাকুচায় সখ্যছিল তার অভ্যাস!


ভাবিনি সেই শ্রাবণ বর্ষা গোধূলি শেষে
হবে সন্ধ্যার মসৃণ কবিতার পাণ্ডুলিপি
ক্যালাডিয়াম, ফিলোডেনড্রনের বিষক্রিয়া থেকে বাঁচতে
স্লিপিং ট্যাবলেট সেবনে
বেছেনিয়েছিলাম বিভৎস মৃত্যু।
হায় নিয়তি, জমদুৎ দ্বারে এসে ফিরে যায়,
অতঃপর হ্যাঙ্গিং বাই এ রৌপ পদ্ধতি অবলম্বন
এত কিছুর পরও বিধাতার কৃপায়
জীবন্তদেহে দিব্যি ঘুরছি ফিরছি।
আজ তোমার সবুজ বাতি জ্বলতে দেখে আর ঈর্ষা হয় না,
নেই রিংটোনের অপেক্ষা,
আছে শুধু নিজের প্রতি নিজেকে ধিক্কার
ভুল তরোনিতে নোঙ্গর ফেলায়।


বলতে পারো এ অসামাজিকতার শেষ কোথায়?
কতটা নিচে নামলে প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করে?
মানুষ হয়ে মানুষের মৃত্যু কামনা করে?
মাধবীলতা ছিড়ে ফেলে মল্লিকার নেশায় মাতাল হয়?
কেন ভাবলে না কি হবে আমার কোথায় গিয়ে দাড়াবো আমি?
কোন অপরাধে ওয়াটার হেমলক পয়জনে ভরে দিলে জীবন?
আমার পৃথিবীতে আর কোন সমাজ নেই,
কোন দেশ নেই, নেই কোন ভিটে-
পুরোটা জুড়ে আছ শুধু 'তুমি', 'তুমি' এবং 'তুমি'!


২৮ জানুয়ারি ২০২০